কটিয়াদীতে সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ

0
106
কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র
এ ঘটনায় আজ রোববার সকালে চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে মামলাটি করেন সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের চাচাতো ভাই শফিকুল ইসলাম।

অপর দিকে ক্ষমতার অপব্যবহার ও সাধারণ লোকজনকে নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ তুলে আজ সকালে মানববন্ধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের লোকজন। মানববন্ধন থেকে সাবেক স্বাস্থ্যসচিবকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এ নিয়ে এখন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উপজেলা পরিষদ সড়কে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মাহফুজুর রহমান কটিয়াদী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি এবার নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাবেক স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নানের গ্রামের বাড়ি চান্দপুর ইউনিয়নের মানিকখালী পূর্বপাড়ায়। মাহফুজুর রহমানও একই গ্রামের বাসিন্দা। মাহফুজুর রহমানের আপন ভাতিজা মনিরুজ্জামান মাটি ভরাটের কাজ করেন। গতকাল শনিবার সকাল নয়টার দিকে মনিরুজ্জামানের লোকজন ট্রাক্টর দিয়ে সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের বাড়ির সামনের সড়ক ব্যবহার করে মাটি পরিবহন করছিলেন। সড়কটি সরকারি। এ সময় সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের বাড়ির লোকজন তাঁদের ওই সড়ক ব্যবহার করে মাটি পরিবহন না করার জন্য বলেন।

ট্রাক্টরচালক সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের বাড়ির লোকজনের কথা না শুনে মাটি পরিবহন করছিলেন। তখন সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের বাড়ির লোকজন ট্রাক্টরচালক ও তাঁর সহকারীকে মারধর করে। এতে ক্ষুব্ধ হন মাহফুজুর রহমানের বাড়ির লোকজন। পরে তাঁরা দলবদ্ধ হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। হামলায় সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের বাড়ির চারজন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ফেরদৌস আহমেদকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে। হামলায় আহত অপর তিনজন হলেন শফিক মিয়া, সোহরাব হোসেন ও রফিক মিয়া। তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হোসেনপুর সার্কেল) সুজন চন্দ্র সরকার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জালাল উদ্দিন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশতাকুর রহমান, কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহাদত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে আজ রাতে কথা হয় সাবেক স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নানের ছোট ভাই নাসির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিয়ম না মেনে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি পরিবহনের কারণে সড়ক ও সড়কের পাশের গাছ ভেঙে পড়েছে। আমরা কেবল বলেছিলাম কম করে মাটি পরিবহন করার জন্য। কিন্তু তাঁরা আমাদের কথা শোনেননি। বাধা দেওয়ায় শনিবার চেয়ারম্যানের লোকজন বাড়িতে এসে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালান।’

এ সময় সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের প্রভাব খাটিয়ে লোকজনকে নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, এলাকায় একটি পক্ষ তাঁর ভাই (সাবেক স্বাস্থ্যসচিব) ও পরিবারের সদস্যদের উন্নতি মেনে নিতে পারে না। তারা কারণে–অকারণে অপবাদ দিয়ে থাকে। অবাঞ্ছিত ঘোষণার ব্যাপারে নাসিরের ভাষ্য, এ ঘটনা তাঁর ভাই জানেন না, আবার অবাঞ্ছিত করার কথাও তাঁর কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি। সুতরাং এসব নিয়ে ভাবনার কোনো সুযোগ নেই।

অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, সাবেক স্বাস্থ্যসচিবের বাড়ির লোকজনের অত্যাচার ও নির্যাতনে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। মূলত ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মানববন্ধন পালন করে এবং সাবেক স্বাস্থ্যসচিব আ. মান্নানকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। এতে তাঁর কোনো হাত নেই। কিন্তু হাত না থাকলেও এখন তাঁকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে।

কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এস এম শাহাদত হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত মামলার কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.