নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে সই করা নিয়ে বক্তব্য দেওয়া সেই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার কক্ষ থেকে সরিয়ে নেওয়া চেয়ার-টেবিল ও মামলার ফাইলপত্র ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর কক্ষের সামনে থেকে খুলে ফেলা নামফলকটিও বৃহস্পতিবার পুনস্থাপন করা হচ্ছে বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইং জানিয়েছিল, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার বরখাস্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেদিনই এমরান আহম্মদের কক্ষ থেকে চেয়ার-টেবিল ও মামলার নথিপত্রসহ অন্যান্য জিনিস সরিয়ে নেওয়া হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বলেছিলেন, ‘ড. ইউনূসের বিষয়ে বিবৃতি-সংক্রান্ত বক্তব্য দিয়ে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তার (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এর আগে সোমবার এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া জানিয়েছিলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে তিনি সই করবেন না। তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসের সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।’
ওই দিন সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘অধ্যাপক ড. ইউনূসের পক্ষে নোবেল বিজয়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১৬০ জনের বেশি সম্মানীয় ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন যে, ওনাকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সেটার বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে সেই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল ইসরায়েলের যে আইন সংস্কার হচ্ছে-বিচার সম্পর্কিত, তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু এটা আমার নিজস্ব চিন্তা।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করার কারণ হিসেবে এমরান আহমেদ বলেন, ‘আমি মনে করি, নোবেল বিজয়ী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ ১৬০ জনের বিবৃতি ঠিকই আছে। আমি ওনাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত।’
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার দাবি অস্বীকার করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এ বিষয়ে তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে বলেছেন, এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া যে কথা বলেছেন, ‘তা কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে দিয়েছেন, কাউকে খুশি করার জন্য বলেছেন।’