কক্সবাজারের সাবেক ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশের সম্পদের খোঁজে সাত দেশে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রদীপ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
দুদক সূত্র জানায়, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই দেশগুলো থেকে তথ্য পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রদীপের ঘুষের টাকায় তাঁর স্ত্রী চুমকি সব সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে দুদকের তদন্তে উঠে আসে। দুদকের মামলায় স্ত্রীর সাজাও হয়। স্ত্রীকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা করায় সাজা হয়েছে প্রদীপেরও। তবে দেশের বাইরে প্রদীপের কোনো সম্পদ আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে সাতটি দেশে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।
প্রদীপের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম আজ রোববার রাতে বলেন, ২০১৮ সাল থেকে স্ত্রীসহ ওসি প্রদীপের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে ওসি প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকিকে সম্পদ বিবরণী জমার নোটিশ দেওয়া হয়। সম্পদ বিবরণী জমার পর চুমকির বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, দুদকে দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার প্রমাণ মেলে। তবে প্রদীপের কোনো সম্পদের হদিস মেলেনি। এ অবস্থায় তিনি বিদেশে সম্পদ গড়েছেন কি না, জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মাধ্যমে সাত দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে গত মাসে চিঠি দেয় দুদক।
আদালত ও দুদক সূত্র জানায়, গত বছরের ২৭ জুলাই দুর্নীতির মামলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার দাশকে ২০ বছর ও তাঁর স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে প্রদীপের ঘুষের টাকায় চুমকির নামে নেওয়া কোটি টাকার বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় প্রদীপ ও চুমকি দুজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এই হত্যা মামলায় প্রদীপসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। গত বছরের ৩১ জানুয়ারি এই রায় দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
ওসি প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি বর্তমানে কারাগারে। প্রদীপের আইনজীবী সমীর দাশগুপ্ত দাবি করেন, প্রদীপের স্ত্রীর সব সম্পদ তাঁর শ্বশুরের কাছ থেকে পাওয়া। প্রদীপের কোনো সম্পদ নেই।