প্রধান আসামি ফয়সাল করিম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড

0
19
ফয়সাল করিম মাসুদ, ছবি : বাসস

শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সিআইডি। সিআইডি বলছে, প্রাথমিকভাবে পাওয়া এ তথ্যের ভিত্তিতে ফয়সাল করিমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার–সংক্রান্ত পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে তারা।

সিআইডি জানিয়েছে, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে এসব অস্বাভাবিক লেনদেন শনাক্ত করা হয়েছে। এ লেনদেন মানি লন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ কিংবা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে—এমন সন্দেহ থেকে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে বলে সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফয়সাল করিম ও তাঁর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার জন্য দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এসব অর্থের মূল সরবরাহকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করতেও অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরপরই ঘটনাটির নানা দিক নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ঘটনার পর দ্রুত ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, ঘটনাস্থল থেকে ঘাতকের ব্যবহৃত গুলির খোসা উদ্ধার এবং পরবর্তী সময়ে পাওয়া বিভিন্ন আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

এই ধারাবাহিকতায় গ্রেপ্তার অভিযানের সময় উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বইয়ের তথ্যও গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করে সিআইডি। এতে দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একাধিক চেক বইয়ে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থ উল্লেখ রয়েছে।

ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ নামের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, ফয়সাল করিম সীমান্ত পার হয়ে ভারতে চলে গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। তবে আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফয়সাল করিম দেশে আছেন নাকি বিদেশে চলে গেছেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। ইতিমধ্যে ফয়সাল করিমের মা-বাবা, স্ত্রী, শ্যালকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও তাঁর সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারলেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.