বহু ঐতিহ্যের সাক্ষী লাওসের ভিয়েনতিয়েন। হাজার বছরের পুরোনো এই শহর পর্যটকদেরও দারুণ পছন্দ। পশ্চিমে মেকং নদী, দক্ষিণে পনেরো শতকে নির্মিত বৌদ্ধমন্দির ‘থাট ফাউন স্তূপ’। কেবল ধর্মীয় ঐতিহ্য নয়, অসংখ্য স্থাপত্য আর শিল্পসংস্কৃতিরও ধারক এই শহর। সেখানকার নিউ লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে নতুন এক ইতিহাস সামনে রেখে আজ মেয়েদের অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
মাসখানেক আগে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। এবার ছোটদের পালা। ২ আগস্ট লাওসে গিয়ে সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতেও অসুবিধা হচ্ছে না বাংলাদেশের মেয়েদের। ২৩ সদস্যের দলের সবাই সুস্থ আছেন, নেই কোনো চোটের সমস্যা। বর্তমানে সেখানকার আবহাওয়া অনেকটা বাংলাদেশের মতোই।
‘এইচ’ গ্রুপে থাকা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকতে পারলেই রচিত হবে আরেক ইতিহাস। দ্বিতীয় হলেও বেঁচে থাকবে আশা। আট গ্রুপের সেরা আট দলের সঙ্গে সেরা তিন গ্রুপ রানার্স আপ দলও পাবে আগামী বছর থাইল্যান্ডে মূল পর্বে খেলার সুযোগ।
সুযোগটা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। লাওসের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার আগেও এশিয়ান কাপের টিকিট কাটার কথা বলেছিলেন অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার। কালও সেই কথাই আত্মবিশ্বাস নিয়ে বললেন, ‘আমরা এখানে এসেছি এএফসি কাপে কোয়ালিফাই করার জন্য। সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যেন প্রতিটি ম্যাচ ভালো খেলতে পারি।’

কোচ পিটার বাটলারের কাছে অবশ্য জয়টাই সব নয়। তাঁর চোখে এটা দলের অগ্রগতির পরিমাপকও, ‘শুধু ফলাফলের দিক থেকে নয়, এই টুর্নামেন্টটি আমাদের জন্য সব দিক দিয়েই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ে। কারণ, এটি আমাদের উন্নয়নের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।’
লাওসের সঙ্গে আগে কখনো খেলেনি বাংলাদেশ। সিনিয়র এবং বয়সভিত্তিক মিলিয়ে এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। র্যাঙ্কিংয়ে লাওস অবশ্য বাংলাদেশ (১২৮) থেকে ২১ ধাপ এগিয়ে ১০৭তম অবস্থানে। কিন্তু বাংলাদেশ কোচের কাছে র্যাঙ্কিং কেবলই একটা সংখ্যা, ‘তাদের র্যাঙ্কিং নিয়ে আমাদের ভাবার দরকার নেই। এটা একটা সংখ্যামাত্র। আমাদের দরকার ম্যাচে প্রভাব ফেলা।’
মেয়েরা গত জুলাইয়েই সেটা করে দেখিয়েছেন। বড়দের এশিয়ান বাছাইয়ে নিজেদের থেকে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইন, ৭৩ ধাপ ওপরের দল মিয়ানমারকে হারিয়েছে। সেই দলের ৯ ফুটবলার আছেন অনূর্ধ্ব–২০ দলে।

বয়সভিত্তিক দলটি আছেও বেশ ছন্দে। ২০২৪ সাল থেকে এক ম্যাচও হারেনি তাঁরা। কদিন আগে এই দলটাই ঘরের মাঠে ৬ ম্যাচের ৬টিতে জিতে সাফ শিরোপা উৎসব করেছে। এবার তাদের এশিয়ান পরীক্ষা পাসের অপেক্ষা। যে পরীক্ষায় আগে কখনোই পাস মার্কস তুলতে পারেনি মেয়েরা। মূল পর্বে ওঠা দূরে থাক, বাছাইয়ে এর আগে ১২ ম্যাচ খেলে মাত্র দুটিতে জয় আছে বাংলাদেশের।