মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ ইনকরপোরেটেড বা এমটিএফইর ফাঁদে পড়ে দেশের চার-পাঁচ লাখ মানুষ কয়েক হাজার কোটি টাকা খুঁইয়েছে। এ ব্যাপারে নজরদারি করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের এ-সংক্রান্ত অভিযোগ ও প্রতারক চক্রের তথ্য জানাতে সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে সিআইডি।
সিআইডি শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ডলার, শেয়ার বা ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচার কানাডা ও দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এমটিএফই। অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানো এবং লেনদেন পরিচালনা করা হয়। নিজেদের ছায়া প্ল্যাটফর্মে ট্রেড করার সুযোগ দিয়ে এই অ্যাপ সম্প্রতি আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বাংলাদেশে তাদের কার্যালয় না থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ঘরে বসে সহজে আয়ের পথ বলে ফেসবুক-ইউটিউবে ব্যাপক প্রচার চালায় তারা। ভিডিও ও বিজ্ঞাপন দেখে ভুক্তভোগীরা আগ্রহী হয়। সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হয় একজন আরেকজনকে দেখে। এ ক্ষেত্রে এমটিএফই বহুস্তর বিপণন বা এমএলএম পদ্ধতিতে কাজ করেছে। বেশি লাভের আশায় লাখ লাখ মানুষ সেখানে বিনিয়োগ করেছে। কিছু মানুষ লাভের অংশ পেয়েছেও। শেষ পর্যন্ত বিনিয়োগের সব অর্থই খোঁয়াতে হয় গ্রাহকদের। ঢাকা, বরিশাল, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, কুমিল্লা ও সাতক্ষীরায় প্রতারণা সবচেয়ে বেশি হয়েছে।
প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে সিআইডি জানায়, গুগল প্লে স্টোর থেকে যে কেউ এমটিএফই অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে পারত। এর পর তাদের নিজস্ব ওয়ালেটে ট্রেড করার জন্য ডলার রাখতে হতো। ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে দিনশেষে পাঁচ হাজার টাকা লাভ হবে– এমন কল্পিত মুনাফার কথাও বলা হতো। নিবন্ধনের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হয়েছে গ্রাহকদের। ভার্চুয়ালি ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ডলার কেনাবেচা করা হলেও লভ্যাংশ দেওয়া হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছে, শুধু এমটিএফই নয়, দেশে সক্রিয় আছে এমন আরও অনিবন্ধিত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক প্রতারক চক্র। দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএম ব্যবসা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ। বিনিয়োগকারীদের এ ব্যাপারে সচেতনতা দরকার।