এবার রমজানে সাশ্রয়ী দামে মিলবে না নিত্যপণ্য

0
113
নিত্যপণ্য

প্রায় বছরজুড়েই নিত্যপণ্যের অতি মূল্যে হাঁসফাঁস ভোক্তাদের। আর কয়েক দিন পরেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। তবে এবার রমজান ভোক্তাদের জন্য বেশ খরচের হতে চলেছে। রমজান সামনে রেখে বাজার যেন আরও বেশি তেতে আছে। গত বছরের তুলনায় বেড়েছে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম।

শুক্রবার (৮ মার্চ) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায় বাড়তি দামে ঘাম ছুটছে ক্রেতাদের।

বাঙালির ইফতারের জরুরি পণ্য ছোলার বাজার লাগাম ছাড়া। গত বছর ৮০ টাকায় বিক্রি হতো ভালো মানের ছোলা, এখন তা ১১০ টাকা।

বছরের ব্যবধানে কেজি প্রতি চিনির দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। ১১৫ টাকার চিনি এখন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।

রোজাদারদের জন্য তাৎক্ষণিক পুষ্টির জোগান দেওয়া সুস্বাদু খেজুর এবার ভোক্তাদের কাছে তেতোর সামিল। বছরে দাম হয়েছে দ্বিগুণ। গত বারের ২০০ টাকার খেজুর এবার ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দাম বাড়ার বিষয়ে কাওরান বাজারের এক ক্রেতা বলেন, এখন খেজুর নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য নয়। শুধু উচ্চ বিত্তরাই এখন খেজুর খাবেন।

এবার সেহেরিতে মাংসের স্বাদ নিতে পারবে না অনেক মধ্য ও নিম্নবিত্ত। গেল কয়েক দিনে বয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। বয়লার মুরগির দাম; প্রতি কেজির জন্য ২২০-২৪০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৯০০ টাকায়।

কাওরান বাজারের মুরগি বিক্রেতা দুলাল বলেন, পনের দিন আগেও সোনালি মুররির কেজি ছিল ২৭০ টাকা, এখন তা ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চড়া গরুর মাংসের দামও। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।

দাম বাড়ার বিষয়ে এক গরুর মাংস বিক্রেতা বলেন, আমাদের ৭১৫ টাকা কেজি দরে কেনা পড়েছে। তাহলে কত দরে বিক্রি করবো আপনারই বলুন?

মাছের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি কেজি ইলিশে গুণতে হবে দুই হাজার টাকা। আর প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫২০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বিক্রেতা রফিক মিয়া বলেন, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি করেছি ১৮০০ টাকায়। বর্তমানে তা ২০০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। বোয়ল মাছ গত সপ্তাহে ছিল ৪০০ টাকা কেজি এখন তা ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

তবে কেজিতে ৫ টাকা কমায় কিছুটা স্বস্তি আছে সয়াবিন তেলে। কমানোর বিষয়ে বোতলের গায়ের রেটের সঙ্গে মিল না থাকায় ঝামেলা পোহানোর অভিযোগ করেছেন বিক্রেতারা।

অনেকটাই স্থিতিশীল সবজির বাজার। তবে দাম বেড়েছে লেবু ও শসার। প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৯০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, আলু ৩৫ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা, শসা ৬০ টাকা ও লতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৪০ টাকা, খিরাই ৫০-৬০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গার ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৪০-৬০ টাকা, আকারভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.