এবার মিয়ানমার থেকে একসঙ্গে ১১৪ সীমান্তরক্ষীর অনুপ্রবেশ, মোট ২২৯

0
159
একসঙ্গে ১১৪ জন সীমান্তরক্ষী মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ

মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির প্রবল আক্রমণের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা। সর্বশেষ একসঙ্গে ১১৪ জন সীমান্তরক্ষী মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করেছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়াল ২২৯ জনে।

এর আগে রোববার থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্য সংখ্যা ছিল ১১৩। পরে বিজিবি তাদের আরও দুজনকে রিসিভ করলে সে সংখ্যা হয় ১১৫। সর্বশেষ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একসঙ্গে আরও ১১৪ জন সশস্ত্র বিজিপি সদস্য বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করেন।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের ২২৯ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বিজিবি সদস্যরা তাদের সবাইকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছেন।

এদিকে, একইসময়ে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। তার মাধ্যমে মিয়ানমারের কাছে সীমান্তের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবাদ জানাবে বাংলাদেশ।

এর আগে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনী ও বিজিবিকে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর আইনমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় চলমান অস্থিরতার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করা হয়েছে। পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, জান্তা সামরিক বাহিনীর আরও বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করেছে আরাকান আর্মিসহ জাতিগত স্বাধীনতাকামীরা। এ ছাড়া গত চারদিনে তাদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে দেশটির অন্তত ৬২ জন সেনা। জান্তার বিরুদ্ধে মিয়ানমারজুড়ে হামলা জোরদার করেছে সশস্ত্র এই জাতিগত স্বাধীনতাকামীরা।

গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এ সংঘাত বেড়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.