চার মাস যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়ে গত মাসে দেশে ফিরেছেন মডেল ও অভিনয়শিল্পী সাবিলা নূর। আসার আগে জীবনের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা ও আগামীর পরিকল্পনা। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন মনজুর কাদের
সাবিলা নূর : আমার বড় বোন টেক্সাসে থাকে। আব্বু-আম্মুও যুক্তরাষ্ট্রে। আমি মূলত টেক্সাসে ছিলাম। ফ্লোরিডাও গিয়েছিলাম। চার মাসে অস্টিনেও দুই-তিনবার যাওয়া হয়েছে। এবারের ট্যুরে নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে, সরাসরি টেক্সাসে লিনকিন পার্কের কনসার্ট উপভোগ করা আর ফ্লোরিডায় ইউনিভার্সেল স্টুডিও ভিজিট করা। এর আগে আমি আর নেহাল (সাবিলার স্বামী) সিঙ্গাপুরের ইউনিভার্সেল স্টুডিওতে গিয়েছিলাম।
প্রশ্ন: লিংকিন পার্কের প্রতি ভালোবাসা কবে থেকে?
সাবিলা নূর : একদম ছোটবেলা থেকে, বলতে পারেন গান বোঝার বয়স থেকেই লিনকিন পার্ক আমার প্রিয়। লিনকিন পার্কের ‘রানওয়ে’, ‘পয়েন্টস অব অথরিটি’, ‘সামহয়ার আই বিলং’, ‘পেপারকাট’, ‘লায়িং ফ্রম ইউ’, ‘ব্লেড ইট আউট’, ‘লস্ট ইন দ্য ইকো’, ‘লিভ আউট অল দ্য রেস্ট’—এই গানগুলো প্রিয়, গুনগুন করে গাই। টেক্সাসে যে লিংকিন পার্কের কনসার্ট, এটা আমার মাথায় ছিল না। বড় বোন নাবিলা কনসার্টের ঠিক দুই দিন টিকিট দিয়ে চমকে দেয়। গ্লোব লাইফ ফিল্ডে লিনকিন পার্কের কনসার্ট সামনাসামনি দেখব, এটা একটা স্বপ্নের মতো, তাই সুযোগটা হারাতে চাইনি আরকি। আমার বড় ভাইয়া প্রথম লিনকিন পার্কের গানের খোঁজ দেন, তখন ছিল এম্পিথ্রির যুগ। এবার যখন কনসার্টে যাচ্ছিলাম, তখন খুব রোমাঞ্চ লাগছিল। পুরো কনসার্টে অনেক এনজয় করছি। আমার কয়েকজন বন্ধু ছিল, তাদের সঙ্গে গেছি। ওরা ওখানেই থাকে। তবে চেস্টারকে (ব্যান্ডের প্রয়াত গায়ক) খুব মিস করছি।
প্রশ্ন: সুযোগ পেলেই কনসার্ট উপভোগ করেন?
সাবিলা নূর : সময়–সুযোগ হলে দেখি। এবার তো দেশের বাইরে বাংলাদেশের ব্যান্ড আর্টসেল ও ওয়ারফেজের কনসার্টও দেখেছি।
প্রশ্ন: এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো লাগার কনসার্ট কোনটি?
সাবিলা নূর : আমি অনেক কনসার্ট দেখেছি। তবে এখন পর্যন্ত আয়রন মেইডেনের কনসার্ট সবচেয়ে ভালো লেগেছে। ওই কনসার্টও দেখেছি টেক্সাসে, ২০১৭ সালে। এবার লিংকিন পার্কের কনসার্টে বন্ধুবান্ধব মিলে গিয়েছি, ওরা আমার বড় বোনের খুব ঘনিষ্ঠ। আমি খুব কাছের একজনকে পেয়েছি। উনি চিত্রলেখা গুহর (অভিনয়শিল্পী) মেয়ে আর্নিলা গুহ। তিনিও টেক্সাসে থাকেন, আমার বড় বোনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ। ওই সূত্রে আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। লিনকিন পার্কের কনসার্ট সরাসরি দেখা জীবনের স্মরণীয় একটা অভিজ্ঞতা।
সাবিলা নূর : আমার যদি কোনো গুণ থাকে, তার মধ্যে যদি একটার কথা বলি, তা হলো, কোনো কিছুর সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা না করা। কাজটা আমি পছন্দ করি না। তবে আমাদের দেশের শিল্পীদের নিয়েও যদি ভালোভাবে উপস্থাপন করা যায়, তাঁরাও দারুণ কিছু করে দেখাতে পারবেন। আমি টেক্সাসে বাংলাদেশি ব্যান্ডের কনসার্ট দেখা এবং দেশে বেশ কয়েকটি কনসার্ট দেখার অভিজ্ঞতা থেকে এটা বলতে পারি। কনসার্ট অনেকে আয়োজন করে। আমাদের সবারও দায়িত্ব এটা নিশ্চিত করা, কনসার্টের পরিবেশ যেন ঠিকঠাক থাকে। এটা আসলে সমন্বিত পরিশ্রমের ফল। আমাদের শিল্পীরা যে পরিমাণ মেধাবী, যেভাবে পরিশ্রম দিয়ে কনসার্ট করেন, তাঁরা আরও অনেক বড় প্ল্যাটফর্ম ডিজার্ব করেন। এবার আমি আর্টসেল আর ওয়ারফেজের কনসার্টও টেক্সাসে দেখেছি, ওরা যখন ট্যুর করেছিল। এই দুটি ব্যান্ডের প্রতি কী পরিমাণ ভালোবাসা দেখেছি, তা সত্যিই দারুণ। এ রকমও ঘটেছে, অনেকে অস্টিন বা হিউস্টোনে টিকিট পায়নি, তাই ড্রাইভ করে ডালাসে এসে কনসার্ট দেখেছেন।
প্রশ্ন: দেশে ফেরার পর কীভাবে সময় কাটছে?
সাবিলা নূর : কিছু চিত্রনাট্য হাতে পেয়েছি। পড়ছি। এখান থেকে নতুন কোনো কাজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।
সাবিলা নূর : একদম তা–ই। নতুন কোনো কাজ করা হয়নি। এবার ভালোবাসা দিবস ফাঁকা যাবে।
প্রশ্ন:ঈদের কাজকর্মের খবর বলুন?
সাবিলা নূর : দেশের বাইরে যাওয়ার আগে আমি কয়েকটা কাজ করে গিয়েছিলাম। এখন তো আসলে রোমান্টিক কাজ একটু কম করছি। যে কাজগুলো করেছি, সেগুলো ভালোবাসা দিবসে মুক্তি দেওয়া যাচ্ছে না। আগে কাজগুলো আছে দু–তিনটা, যা ঈদে প্রচারিত হবে। সেই সঙ্গে নতুন কিছু কাজ শুরু করব।
প্রশ্ন:রোমান্টিক কাজ কম করা হচ্ছে কেন?
সাবিলা নূর : অনেক দিন তো করলাম। এখন নতুন কিছু চরিত্র এক্সপ্লোর করতে চাই। নতুন সব গল্পে কাজ করতে চাই। চরিত্রনির্ভর। আমাদের দেশে নারীদের জীবনের গল্প কম দেখানো হয়। এখন অবশ্য হচ্ছে। আমি ছোট পর্দা না, বড় পর্দার কথাও যদি বলি, প্রিয় মালতী, এই ধরনের গল্পগুলো আমার খুব ভালো লাগে। এ ধরনের গল্প একটা মেয়ের সংগ্রাম, জীবনের অসাধারণ গল্প তুলে আনা হয়। আমার এমন গল্পে কাজ করার খুব ইচ্ছা। সেই সঙ্গে রোমান্টিক ও কমেডি ধাঁচের কাজ তো থাকবেই, কারণ, এই জনরার কাজ দিয়ে আমাদের পরিচিতি পাওয়া। সবকিছু মিলে ভালো প্রোডাকশন কোয়ালিটি আছে, এ রকম কাজগুলো করতে চাই।
সাবিলা নূর : কোনো সুনির্দিষ্ট চাওয়া আমার নেই। আমার সব সময় ইচ্ছা, আগে যা করেছি, তার চেয়ে ভিন্ন কিছু করার।
প্রশ্ন:আপনি সিনেমায় অভিনয় করবেন…
সাবিলা নূর : আমি সব সময় বলে আসছি, বড় পর্দা বড় একটা দায়িত্ব। কারণ, দর্শক আমাকে হলে গিয়ে টিকিট কেটে দেখবেন। আমি অবশ্যই শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে সিনেমায় আসতে চাই। এমন একটা গল্পে কাজ করতে চাই, সবাই যেন বলে, এমন সিনেমায়ই তো সাবিলাকে চেয়েছিলাম। এ রকমটাই তো চেয়েছিলাম। তারই প্রস্তুতি নিচ্ছি। ইচ্ছা আছে এই বছর কিংবা সামনের বছর বড় পর্দার জন্য কাজ করার।