প্রতি বছর ঈদ ও রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যাংকিং চ্যানেলে বাড়ে প্রবাসী আয়। তবে এবার ঈদের মাসে চাঙ্গা হয়নি রেমিট্যান্স। এপ্রিল মাসের ২১ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে মাত্র ১২১ কোটি ডলার সমপরিমাণ প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। দৈনিক গড় রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৫ লাখ ডলার। আগের মাস বা আগের বছরের একই মাসের প্রতিদিনের গড় রেমিট্যান্সের তুলনায় যা কম। মূলত গত এপ্রিলের শুরুতে ঘোষিত দরে ডলার কেনায় কড়াকড়ির পর থেকে রেমিট্যান্স কমছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মাঝে কয়েকটি ব্যাংক প্রবাসীদের থেকে ১১৩ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছিল। যদিও সব ব্যাংক বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) নির্ধারিত ১০৭ টাকা কাগজ-কলমে দেখিয়ে আসছে। গত ১ এপ্রিল ব্যাংকের এমডিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ঘোষিত দরে ডলার কেনার বিষয়ে সতর্ক করেন। বাড়তি দরে ডলার কেনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগতভাবে জরিমানা করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
জানতে চাইলে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাফর আলম বলেন, ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা স্বজনদের কাছে আগেই অর্থ পাঠিয়ে থাকেন। যে কারণে গত মার্চের তুলনায় এপ্রিলে হয়তো রেমিট্যান্স কমেছে। আগামীতে রেমিট্যান্স আবার বাড়বে। এ ছাড়া হুন্ডি চাহিদা যত কমবে, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স তত বাড়বে। ফলে সবাইকে অবৈধ হুন্ডি ঠেকানোর দিকে নজর বাড়াতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রমজান মাস ও ঈদের আগে পরিবারের খরচ, দান, সদকা, ফিতরা দেওয়ার জন্য সাধারণত বেশি অর্থ পাঠান প্রবাসীরা। যে কারণে সব সময়ই ঈদের আগে ব্যাংকিং চ্যানলে রেমিট্যান্স বাড়ে। বাফেদা নির্ধারিত দরে ডলার কেনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ির আগের মাস গত মার্চে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছিল। দৈনিক গড় রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৫১ লাখ ডলার। গত মার্চের এ রেমিট্যান্স ছিল টানা সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগের বছরের এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০১ কোটি ৮ লাখ ডলার। দৈনিক গড় রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
রাষ্ট্রীয় মালিকানার অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরশেদুল কবীর বলেন, রোজার আগেই হয়তো প্রবাসীরা স্বজনদের জন্য অর্থ পাঠিয়ে দিয়েছেন। যে কারণে চলতি মাসে রেমিট্যান্স কিছুটা কম। তিনি বলেন, এখন সব ব্যাংক বাফেদা নির্ধারিত দর মেনে রেমিট্যান্স কিনছে। ফলে আগামীতে যে ব্যাংকের বিতরণ চ্যানেল যত ভালো হবে, তাদের মাধ্যমে রেমিট্যান্স তত বাড়বে।