চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসরে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) নগরীর লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় ফাইনাল খেলা। প্রায় ২৩ মিনিটের লড়াই শেষে আয়োজক কমিটি শরীফকে বিজয়ী ঘোষণা করে। একই জেলার রাশেদ বলী রানার্সআপ হন।
এদিন বেলা সাড়ে পাঁচটায় শুরু হয় জব্বারের বলীখেলা। এই ফাইনালে অংশ নেন বাঘা শরীফ ও রাশেদ বলী। গতবারের মতো এবারও এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় ফাইনাল খেলা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
বিকেল চারটায় জব্বারের বলী খেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ।বিকেল থেকেই লালদীঘি মাঠ ছিল দর্শকে ভরা। জব্বারের বলীখেলাকে ঘিরে পুরো লালদীঘি এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
আবদুল জব্বারের বলীখেলাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে। এতে বাহারি সব পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন দেশের নানা জেলা থেকে আসা কয়েকশো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এ মেলা চলবে শনিবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত।
জব্বারের বলীখেলা ও মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং আব্দুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল জানান, বলীখেলার ১১৬তম আসরে এবার রেজিস্ট্রেশন করেছেন ১৪৭ জন বলী। জাতীয় পর্যায়ের বলীরাও এবারের আসরে অংশ নেন।
তিনি আরও বলেন , গত বছর অংশ নিয়েছিলেন ৮৪ জন বলী। সেবারই প্রথমবার অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ফরিদ, যিনি স্থানীয়ভাবে ‘বাঘা শরীফ’ নামে পরিচিত। রানার্সআপ হয়েছিলেন রাশেদ, আর তৃতীয় হন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা।
উল্লেখ্য, প্রায় ১১৫ বছর আগে চট্টগ্রাম শহরের বদর পাতির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম আব্দুল জব্বার সওদাগর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে এ অঞ্চলের যুবকদের শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে ১৯০৯ সালের ১২ বৈশাখ চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে এই বলি খেলা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সেই থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিবছর ১২ বৈশাখ এই বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এবার বলি খেলার আসর হচ্ছে ১১৬ তম আসর।