এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তির’ আত্মপ্রকাশ, আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তরিকুল

0
14
জাতীয় যুবশক্তি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এতে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তরিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও ডা. জাহিদুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
 
শুক্রবার (১৬ মে বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া, কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন তুহিন মাহমুদ।
 
সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জাতীয় যুবশক্তি বিশ্বাস করে তরুণরা ইতিহাসের প্রতিটি মৌলিক পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন সময় এসেছে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও নতুন প্রজাতন্ত্র নির্মাণের। এক ধারাবাহিক লড়াইয়ের সন্ধিক্ষণে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। যার সূচনা হয়েছিল ১৯৪৭ সালের আজাদীর লড়াইয়ে, পরবর্তীতে তা একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নিয়েছে। আর চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের এক নতুন দিশা ও প্রত্যয়ের জন্ম দিয়েছে।
 
এই অভ্যুত্থান কেবল ক্ষোভের বিস্ফোরণ নয়, এটি ছিল একটি নতুন রাজনৈতিক কল্পনার জন্মমুহূর্ত। যেখানে বর্তমান ব্যবস্থা আর চলতে পারে না বলে তরুণেরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে। এক নতুন রাষ্ট্রকল্প ও পথ প্রয়োজন। নতুন রাষ্ট্র ও রাজনীতির আকাঙ্ক্ষাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূচনা করেছিল। যুবশক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানেরই ধারাবাহিকতা।
 
এতে আরও বলা হয়, যুবশক্তি দায় ও দরদের রাজনীতি করতে চায়। যেখানে নেতৃত্ব মানে দায়িত্ব গ্রহণ, সহানুভূতিশীলতা, সহনশীলতা এবং নাগরিকের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ। দায়িত্ব, সহানুভূতি ও মানবিকতা ছাড়া রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা সম্ভব নয়। যুবশক্তি এমন এক বাংলাদেশ চায় যেখানে নাগরিক মর্যাদা কাগজে নয়, বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত হবে। যেখানে রাষ্ট্র সকল ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম ও জাতিসত্তার মর্যাদা দেবে। তাছাড়া, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কেবল স্লোগান নয়, রাষ্ট্রীয় নীতির ভিত্তি হবে। যেকোনও প্রকার ধর্মবিদ্বেষ ও উগ্রতাকে পরিহার করে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্মবোধ এবং সামাজিক-নৈতিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সম্প্রীতি, ইনসাফ ও নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা চায় যুবশক্তি।
 
এছাড়াও ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশপন্থা যুবশক্তির রাজনৈতিক চিন্তার স্বতন্ত্র মেরু। যা বাংলাদেশের ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও মানুষের সংগ্রাম থেকে উৎসারিত এক সার্বভৌম রাষ্ট্রচিন্তা। এটি একাধারে ফ্যাসিবাদবিরোধী এবং আগ্রাসনবিরোধী রাজনৈতিক পথ। যা কোনো বৈশ্বিক শক্তির ছায়ায় নয়, বাংলাদেশের নিজস্ব দিশা, আত্মমর্যাদা ও জাতীয় স্বার্থে বিশ্বাসী। বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক অঞ্চলজুড়ে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও কৌশলগত শক্তি হিসেবে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব নিতে হবে। এটি করতে হলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সভ্যতাগত রুপান্তর প্রয়োজন।
 
ইনসাফ ও সমতার ভিত্তিতে একটি জাতীয় অর্থনীতি গড়ে উঠবে। যেখানে কাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি সবার নাগালের মধ্যে হবে। রাষ্ট্রে তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। দুর্নীতিমুক্ত ও মেধাভিত্তিক একটা রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলার জন্য যুবশক্তি কাজ করবে। গণতন্ত্র ও সুশাসনের শুধু ভোটেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। যুবশক্তি চায় প্রতিটি সিদ্ধান্ত, আইন ও নীতিতে জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন হবে, বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ হবে, স্থানীয় সরকার ক্ষমতাসম্পন্ন হবে এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সরকার হবে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।
 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.