১০ আগস্ট তারকা দম্পতি শরীফুল রাজ-পরীমনির সন্তান রাজ্যর বয়স এক বছর পূর্ণ হবে। বিগত ১ বছর প্রতি মাসের ১০ তারিখে বাসায় ছোট পরিসরে রাজ্যর জন্মতারিখ পালন করে আসছিলেন রাজ ও পরী। এবার ১ বছর পূর্তিতে বড় পরিসরে দিনটি উদ্যাপন করবেন পরীমনি। রাজধানীর একটি হোটেলে এই জন্মদিনের অনুষ্ঠান হবে। এরই মধ্যে সেই প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজ্যর মা পরীমনি বলেন, ‘আমরা প্রতি মাসেই বাবুর জন্মদিন পালন করেছি। কিন্তু বাবুর বয়স এক বছর পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। ১০ আগস্ট তা পূর্ণ হচ্ছে। এটি হবে তার সত্যিকারের প্রথম জন্মদিন পালন। অনেক আগে থেকেই এই আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। যেহেতু রাজ্য ছোট, তাই খুব বড় করে প্রথম জন্মদিনের অনুষ্ঠান করছি না। পরিবারের লোকজন ও কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী নিয়ে অনুষ্ঠানটি করব। তবে রাজ্য আরও বড় হলে বড় আয়োজনে করব।’
পরীমনি জানান, মা হিসেবে রাজ্যর সঙ্গে তাঁর এই এক বছরের যাত্রাটা মসৃণ ছিল না। তিনি বলেন, ‘এই পথের সময়টা কখনো আনন্দে কেটেছে, কখনো দুঃখে কেটেছে। রাজ্যকে সামনে রেখে কত যে নির্ঘুম রাত পার করেছি! কিন্তু রাজ্য বড় হয়ে যাচ্ছে, এটাই সুখের।’ পরী বলেন, ‘রাজ্যকে নিয়ে এখন ভাবতে কান্না চলে আসে। এটি বলতে পারেন সুখের কান্না, আনন্দের কান্না। দেখতে দেখতে বাবুটা আমার বড় হয়ে যাচ্ছে। আগে পাশে শুয়ে থাকলে আমি ছোট্ট রাজ্যর পা হাতের মুঠোয় নিয়ে ঘুমাতাম। তখন মনে মনে ভাবতাম, কবে বড় হবে! এখন পাশে নিয়ে ঘুমাতে গেলে ওর পা যেন খুঁজে পাই না। বড় হয়ে গেছে বাবুটা!’
এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আগে বাচ্চাটা উপুড় হয়ে শুয়ে থাকত, ভাবতাম কবে উঠে বসবে। এরপর বসা শুরু করল। আবার যখন বসা শুরু করল, ভাবলাম কবে দাঁড়াবে। দাঁড়াতেও শিখল। মজা লাগে, দাঁড়িয়ে ধীরে ধীরে হাঁটার চেষ্টা না করে দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করে। আর অমনি ধপাস করে পড়ে যায়। হা হা হা…! সব মা-বাবাই চান, সন্তান তাড়াতাড়ি বড় হোক। রাজ্য বড় হচ্ছে, কিন্তু একটা সময় ছোট্ট রাজ্যকে খুব মিস করব।’
এদিকে রাজ্যর জন্মদিন যখন ঘনিয়ে আসছে, তখনো দেশের বাইরে বাবা রাজ। তাহলে কি বাবা ছাড়াই রাজ্যর প্রথম জন্মদিনের উদ্যাপন হতে চলেছে? পরীমনি জানান, রাজ্যর জন্মদিনের সব আয়োজন মা হিসেবে তাঁকে একাই করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘রাজের কোনো খবর নেই। অনেক আগে থেকেই আমি ও রাজ মিলে বাবুর প্রথম জন্মদিন পালনের ব্যাপারে কত পরিকল্পনা করেছিলাম। অথচ জন্মদিন পালনের আগে আগে এসে তাঁকে আর পেলাম না। শুনেছি অনেক দিন হলো, দেশের বাইরে গেছে। এখনো সে ফেরেনি। অনুষ্ঠানের আর এক সপ্তাহ বাকি। অথচ বাবা হিসেবে রাজ কোনো দায়িত্বই পালন করল না। বিষয়টি দুঃখজনক। রাজ্য বড় হয়ে যখন জানতে পারবে, তার প্রথম জন্মদিনে বাবা পাশে ছিলেন না, রাজ্যর জন্য এটি কষ্টের হবে, দুঃখের হবে।’
ঢাকাই ছবির এই নায়িকার কথা, ‘প্রায় এক মাস হয়ে গেল ভারতে আছে রাজ। মাঝখানে রাজ্য অসুস্থ ছিল, পাশে পায়নি বাবাকে। আবার জন্মদিনেও পাশে পাচ্ছে না। একবারও ফোন করে ছেলের খোঁজখবর নেয়নি সে। এই যে জন্মদিন পালন করব, কীভাবে করছি, কতটুকু পারছি, কোনো খবর নেই তাঁর। একবার ফোনও করল না সে।’
আক্ষেপ নিয়ে পরীমনি বলেন, ‘ছেলের জন্মদিনের আয়োজনের জন্য বাবা হিসেবে একটাবার ফোন করে পরামর্শ দিতে পারত, করল না। দেশের বাইরে যাওয়ার পর আমিই নিজ থেকেই তাকে কয়েকবার ফোন করেছি। কিন্তু সে কোনো কল দেয়নি। শুনেছি তার স্মার্টফোনটি হারিয়ে গেছে। কিন্তু তার আরেকটি ফোনও আছে। সেই নম্বরেও ফোন করেছি, ধরেনি। ফিরতি ফোনও করেনি। আর এখন আমি চাই না, রাজ আমার ছেলের জন্মদিনে আসুক।’
গত ২০ মে পরীমনিকে রেখে নিজের সব জিনিসপত্র নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন রাজ। এরপর ২৯ মে দিবাগত রাতে রাজের ফেসবুক আইডি থেকে রাজ ও তিন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর থেকে দুজনের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। এর পর থেকে দুজন আলাদা থাকছেন। এক-দুবার রাজ্যকে দেখতে পরীর কাছে গিয়েছিলেন রাজ।