ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সম্পদ প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ পাউন্ড বা ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার কমে গেছে। ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ইনফোসিস লিমিটেডের শেয়ারের দাম এক দিনে সবচেয়ে বেশি পড়ে যাওয়ার কারণে তাঁর স্ত্রীর সম্পদের এই ক্ষতি হলো।
ইকোনমিক টাইমস ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে বলেছে, ভারতীয় সফটওয়্যার কোম্পানি ইনফোসিসের শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক অক্ষতা মূর্তি। এই শেয়ার তিনি উপহার হিসেবে পেয়েছেন তাঁর পিতা ও কোম্পানিটির সহপ্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির কাছ থেকে।
ভারতীয় প্রযুক্তি খাত সম্পর্কে নেতিবাচক পূর্বাভাস আসার পর সোমবার এই কোম্পানির শেয়ারের দামে বড় ধরনের পতন ঘটে। শেয়ারবাজারের দালালেরা বেশ কয়েকবার ইনফোসিসের শেয়ারের দাম কমিয়ে ধরে। দিনের শেষে শেয়ারের দাম ৯ দশমিক ৪ শতাংশ কমে যায়, যা ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর সবচেয়ে বড় পতন।
সুনাক পরিবারের সম্পদের এই ক্ষতি অবশ্য হয়েছে কেবল কাগজে-কলমে। অক্ষতা মূর্তির সম্পদের মোট মূল্য এখনো ৪৫ কোটি পাউন্ডের বেশি। এই সম্পদ অবশ্য এটাও দেখাচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী এবং ব্রিটেনের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যবধান কতটা বিপুল। দেশটির বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ এখন জীবনযাত্রার সংকটে রয়েছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ঋষি সুনাকের দপ্তর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
অক্ষতা মূর্তির সম্পদ এবং তাঁর বাইরের কার্যক্রম স্বামী ঋষি সুনাকের রাজনৈতিক কর্মজীবনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত হচ্ছে। গত বছর এমন খবর প্রকাশিত হয় যে আইনগত বাসিন্দা না হওয়ার কারণে অক্ষতা মূর্তির ব্রিটেনে কর পরিশোধের প্রয়োজন নেই এবং বিদেশে আয় করা অর্থের ওপর তিনি যুক্তরাজ্যে কোনো কর পরিশোধ করেননি।
অক্ষতা মূর্তি তখন বলেছিলেন যে কর পরিশোধের ক্ষেত্রে তাঁর এই ব্যবস্থা ‘পুরোপুরি আইনসম্মত’। তবে এরপর থেকে তিনি ওই আয়ের ওপর কর দেওয়া শুরু করেন।
অন্য আরেকটি খবরে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের পার্লামেন্টের মানবিষয়ক কমিশনার ড্যানিয়েল গ্রিনবার্গ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্তের বিষয় হলো, ঋষি সুনাকের স্ত্রীর মালিকানাধীন শিশুযত্ন-সংক্রান্ত একটি কোম্পানিতে তার অল্প কিছু শেয়ারের বিষয়ে তিনি ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন কি না।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলছে, তাঁর ওই স্বার্থের বিষয়ে তিনি ‘স্বচ্ছতার সঙ্গে ঘোষণা’ দিয়েছিলেন এবং ঋষি সুনাক তদন্তকারী ড্যানিয়েল গ্রিনবার্গকে সহযোগিতা করবেন।
গত মাসে প্রধানমন্ত্রী তাঁর আর্থিক বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা দিয়েছেন। তাতে তিনি জানিয়েছেন, গত তিন বছরে তিনি যুক্তরাজ্যে ১০ লাখ পাউন্ডের বেশি কর পরিশোধ করেছেন। ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যা বেতন পান, তার চেয়ে বেশি তিনি আয় করেছেন শেয়ার এবং পুঁজিবাজার থেকে লাভের মাধ্যমে।