চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ভারতের আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানির সম্পদমূল্য অনেকটাই কমেছে। ব্লুমবার্গের সূত্রে ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, গত ছয় মাসে গৌতম আদানির সম্পদমূল্য ৬০ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ২০ কোটি ডলার কমেছে।
শীর্ষ ধনীদের মধ্যে এক দিনে সম্পদ হারানোর দিক থেকেও এ বছর শীর্ষে আছেন গৌতম আদানি। গত ২৪ জানুয়ারি হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি আদানির সম্পদমূল্য ২০ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৮০ কোটি ডলার কমে।
হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মোদ্দাকথা হলো, কারচুপির মাধ্যমে ধনী হয়েছেন গৌতম আদানি। তাঁর মালিকানাধীন ব্যবসায়ী গোষ্ঠী কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বাড়িয়েছে। এভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আদানির বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদর হু হু করে কমছে। যদিও গৌতম আদানি বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
এ ঘটনায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আদানি-কাণ্ডে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা সেবির ব্যর্থতা অনুসন্ধানে এক বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করে। সেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল মে মাসের শুরুর দিকে সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গ বা স্টক মূল্য জালিয়াতির অভিযোগ এ মুহূর্তে প্রমাণ করা সম্ভব নয়।
এরপর গত ২৭ জুন আদানি এন্টারপ্রাইজের বার্ষিক প্রতিবেদনে সুপ্রিম কোর্টের গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বক্তব্য উল্লেখ করেন আদানি, যে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে আদানি গোষ্ঠীর ভুল নেই। হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন সম্পর্কে আদানি বলেন, তারা তাঁকে লক্ষ্য করে ভুল তথ্য দিয়েছে এবং সেকেলে ধরনের অভিযোগ এনেছে। হিনডেনবার্গ তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারমূল্য কমিয়ে নিজেরা মুনাফা করতে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সের তথ্যানুসারে, বছরের প্রথম ছয় মাসে বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ ধনী মানুষের সম্পদ বেড়েছে ৮৫২ বিলিয়ন বা ৮৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
গত ছয় মাসে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সভুক্ত ধনী ব্যক্তিদের সম্পদ দিনে ১৪ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার করে বেড়েছে। ২০২০ সালের শেষার্ধের পর চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ধনীদের সম্পদ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।
সম্প্রতি ইলন মাস্ক ও মার্ক জাকারবার্গ বদ্ধ খাঁচার মধ্যে লড়াই করার ঘোষণা দেন। এ নিয়ে বেশ ঠাট্টা-তামাশাও হয়। বছরের প্রথমার্ধে এই দুই ধনীরই সম্পদমূল্য বেড়েছে। গত জুনের ৩০ তারিখ পর্যন্ত টেসলার মালিক ইলন মাস্কের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৯৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৬৬০ কোটি ডলার। অন্যদিকে মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৫৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৮৯০ কোটি ডলার।