বুধবার বিকেল চারটার দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণের কাছাকাছি বাংলাদেশ জলসীমানার ‘মৌলভীর শীল’ নামের এলাকায় মাছগুলো ধরা পড়ে। টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ফিশারিজ ঘাটে আনার পর প্রতি কেজি ৩০০ টাকা দরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মাছগুলো কিনে নেন। একটি ট্রলারের মালিক সালেহ আহমদ ও টেকনাফ কায়ুকখালীয়া ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল কালাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ফিশিং ট্রলার এমভি সালমানের মাঝি আছাবুল ইসলাম ও এমভি আজিজুলের মাঝি নুরুল হাসান বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমার মৌলভীর শীল এলাকায় গতকাল বেলা ১১টার দিকে একের পর একটি করে চারটি ট্রলারের জেলেরা জাল ফেলতে শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিকেলের দিকে সাগরের পানি নড়াচড়া করতে দেখে জেলেরা বুঝতে পারেন, জালে বড় যেকোনো ধরনের মাছের ঝাঁক আটকা পড়েছে।
পরে আশপাশের জেলেদের খবর দিয়ে জাল টানা শুরু করলে নজরে আসে নাগুমাছের ঝাঁক। প্রতিটি মাছের ওজন ৫ থেকে ১৩ কেজি পর্যন্ত। সেখান থেকে ট্রলার মালিকদের জানানো হয় মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি। পরে রাত ৯টার দিকে একে একে চারটি ট্রলার টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ফিশারিজ ঘাটে পৌঁছালে মাছগুলো একনজর দেখার জন্য স্থানীয় লোকজন ভিড় জমান। পরে ট্রলার থেকে ঝুড়িভর্তি করে মাছগুলো ফরিদ আলমের ফিশারিজ ঘাটে বরফ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বড় বড় প্লাস্টিকের ঝুড়ি ভর্তি করে শ্রমিকেরা ট্রলার থেকে মাছগুলো এনে ঘাটে স্তূপ করছেন। কেউ মাছগুলোর ওজন পরিমাপ করছেন। অনেকে বড় বড় বরফের টুকরা এনে মাছের ওপর ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
মাছ ব্যবসায়ী ছৈয়দ আলম, মোহাম্মদ সাইফুল ও হাসান ফকির বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামের হাটবাজারগুলোতে এ মাছের কদর রয়েছে। তাঁরা কয়েকজন মিলে প্রায় ১৫০ মণ মাছ কিনেছেন। এসব মাছ তাঁরা ঢাকা-চট্টগ্রামে সরবরাহের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে আকারভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবেন। এ সময়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খাবারের তালিকায় একটি পছন্দের মাছ এটি। এ মাছের বারবিকিউ পর্যটকের পছন্দের।
টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী এম কায়সার জুয়েল বলেন, মাছগুলো দেখে লোভ সামলাতে না পেরে ৪ হাজার ৫০০ টাকায় ১৩ কেজি ওজনের একটি বড় মাছ কিনেছেন। চট্টগ্রামে বসবাসরত পরিবারের জন্য মাছটি পাঠাবেন।
টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি অবশ্যই সুখবর। সরকারি বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা মান্য করায় বর্তমানে জেলেদের জালে ছোট-বড় প্রচুর পরিমাণে এ মাছ ধরা পড়ছে। মাছগুলো চট্টগ্রাম-ঢাকায় নিয়ে বিক্রয় করতে পারলে আরও ভালো দাম পাওয়া যেত।