একজনের সঙ্গে জুটি গড়ে তুলব, এমন শিল্পী হতে চাইনি: ইরফান সাজ্জাদ

0
5
ইরফান সাজ্জাদ।

ইরফান সাজ্জাদ। অভিনেতা ও মডেল। নাটক, ওটিটি মাধ্যমে অভিনয়ের পাশাপাশি বড় পর্দায়ও তাঁকে দেখা যায়। ১০ বছর পর আগামী ২৯ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে আসছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘ভয়াল’। এ সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তাঁর সঙ্গে…

১০ বছর পর বড় পর্দায় ফিরছেন। এত বিরতির কারণ কী?

বেশ আগে ‘মন জানে না মনের ঠিকানা’ ও ‘ভালোবাসা এমনই হয়’ নামে আমার অভিনীত দুটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এরপর কেটে গেছে ১০ বছর। বিশাল একটা ব্রেক নিয়েছি। মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই এত বছর পর ‘ভয়াল’ দিয়ে সিনেমায় আসছি। সেদিক দিয়ে ধরতে গেলে এটা আমার তৃতীয় সিনেমা। ভিন্ন কিছুর কথা চিন্তা করেই ফের সিনেমায় এসেছি। তার মানে এই নয় যে, মার-দাঙ্গা কিছু নিয়ে ফিরছি। সিনেমা তো বিভিন্ন রকম হতে পারে। সব ইন্ডাস্ট্রিতেই ভিন্ন ধরনের সিনেমা হয়। সবগুলো যে অ্যাকশন সিনেমা হয় এমন না।

সিনেমাটি নিয়ে প্রত্যাশা কেমন?

‘ভয়াল’ সিনেমার গল্প পাহাড়ি অঞ্চলের একটি গল্প। যেটা কিনা নির্মাণ হয়েছে গ্রামের রাজনীতির ওপর একটি ছেলে ও মেয়ের সামাজিক অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে। পুরো গল্পটাই ভিন্ন। এমন গল্পের সিনেমা আমাদের দেশে আর কখনও হয়নি।

বাড়তি কোনো প্রস্তুতি নিতে হয়েছে?

প্রত্যেকটি প্রজেক্টের আগেই কিছু না কিছু প্রস্তুতি থাকে। এটার ক্ষেত্রেও একটু বেশিই। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে সেটা হলো, পাহাড়ি অঞ্চলের যুবকের চরিত্রটা ধারণ করা। সেটা করতে তো সময় লেগেছে। আলাদা করে প্রস্তুতি নিয়েই শুটিংয়ে নেমেছি।

এখন থেকে সিনেমায় নিয়মিত কাজ করবেন?

আমার ইচ্ছে আছে। এ ছাড়া সব ঠিকঠাক থাকলে সিনেমাতেই কাজ করব। এ ক্ষেত্রে দর্শকেরও একটা চাহিদার বিষয় আছে। কারণ, সবচেয়ে বড় বিচারক তো দর্শক। তারা যদি আমাকে চান তাহলে অবশ্যই সিনেমা করব।

নাটকের খবর কী?

বড় পর্দার দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়ায় নাটক কমিয়ে দিতে হয়েছে। আগে রেগুলার নাটকে কাজ করতাম। এখন নাটকে কম অভিনয় করছি। গল্প ঠিকঠাক থাকলে মাসে হয়তো দুটি নাটকে কাজ করছি। আমি যেহেতু নাটকের ছেলে। তাই চাইলেই নাটক ছেড়ে দিতে পারব না। কারণ, আমার দর্শক এখান থেকেই তৈরি। আমি চাইলেই তো নাটক ছেড়ে দিতে পারি না।

অনেকেই বলেন, নাটকের অবস্থা এখন খারাপ, আপনার কাছে কী মনে হয়?

এটাতে এখন কিছু করার নেই। এখনকার নাটক একটি ফরমেটে নির্মাণ হয়। কারণ, নাটকের ভিউটাই এখন নাটকের মূল বিষয়। যেটা পাশ কাটানোর সুযোগ নেই। টিভি চ্যানেলগুলো এখন ইউটিউব-কেন্দ্রিক হয়েছে। সুতরাং ইউটিউবে ব্যবসা করতে হলে দর্শক যেভাবে চাইবে সেভাবেই কনটেন্ট দিতে হবে। এখানে কেউ সস্তা জিনিস দেখতে পছন্দ করে আবার কেউ মানসম্মত জিনিস। কিন্তু স্মার্ট কনটেন্ট দেখার দর্শক ইউটিউবে অনেকটাই কম।

নাটকে কয়েকটি জুটিকে ঘুরেফিরেই দেখা যায়। কিন্তু আপনাকে সবার সঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়। আপনি কি জুটি প্রথা বিশ্বাস করেন?

আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে– আমি সবার সঙ্গেই কাজ করে গেছি। একজনের সঙ্গে কাজ করেই জুটি গড়ে তুলব, এমন শিল্পী হতে চাইনি। কারণ, সবার সঙ্গে কাজ করে আমার ভালো কিছু বিষয় শেখা হয়েছে। তবে আমি জুটি প্রথাতে বিশ্বাসী। কারণ, এটাতে খুব সহজেই পরিচালকরা তাদের কাজটি তুলতে পারে।

ওটিটিতেও আপনি পুরোপুরি সরব। তিন মাধ্যমে কাজের সমস্যা হয় কিনা?

তিন মাধ্যমে কাজ করতে গেলে সমস্যা তো হবেই। নাটকে যেভাবে কাজ হয়, ওটিটি বা সিনেমাতে কিন্তু সেভাবে কাজ হয় না। নাটকে কম দিনে শুট হয় বলে একটু প্রেশার বেশি থাকে। এখন অবশ্য নাটকের পরিচালকরা বড় পরিসরে কাজ করেন। কিন্তু দিন শেষে প্রেশারটা থেকেই যায়। ওটিটি-সিনেমার ক্ষেত্রে সেটা হয় না। সব চেয়ে বড় কথা হলো– এক সঙ্গে দুই নৌকায় পা দিয়ে থাকা কঠিন।

বছর তো প্রায় শেষ হতে চলল। এ বছরের পরিকল্পনা কতটা পূরণ হলো?

এ বছরটা সবার জন্যই খানিকটা ভিন্ন ছিল। বছরের শুরুতে নির্বাচন। বছরের মাঝে আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন। তারপরও যা চেয়েছি, হয়তো সে রকম হয়নি। বছর শেষে একটা সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.