রানী মুখার্জির ঝুলিতে আছে ‘গুলাম’, ‘কুচ কুচ হোতা হ্যায়’, ‘হে রাম’, ‘সাথিয়া’, ‘যুবা’, ‘পেহেলি’, ‘ব্ল্যাক’, ‘হাম তুম’, ‘বীর জারা’, ‘হিচকি’, ‘তালাশ’, ‘মর্দানি’র মতো আলোচিত ছবি। অভিনয়জীবনের ৩০ বছর পার করার পর অবশেষে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার জয় করলেন রানী। জাতীয় পুরস্কার যেকোনো শিল্পীর জন্য অনেক বড় সম্মানের বিষয়। তাই জাতীয় পুরস্কার জয়ের খবরে ভীষণই উৎফুল্ল অভিনেত্রী।
এক বিবৃতিতে অভিনেত্রী বলেন, ‘“মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে”তে অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার জয় করে আমি আপ্লুত, অভিভূত। আমার ৩০ বছরের অভিনয়জীবনের এটা প্রথম জাতীয় পুরস্কার। একজন শিল্পী হিসেবে আমি ভাগ্যবান যে কিছু অভিনব সিনেমায় কাজ করেছি। ওই সব ছবির জন্য আমি সবার অফুরান ভালোবাসা পেয়েছি। এ ছবিতে আমার অভিনয়কে সম্মানিত করার জন্য জাতীয় পুরস্কারের জুরিদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এই মুহূর্তটা আমি আমার ছবির পুরো দল, প্রযোজক নিখিল আদভানি, মনীশা ও মধু, পরিচালক অসীমা ছিব্বারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। এই স্বীকৃতি আমার ৩০ বছরের কাজ আর কাজের প্রতি আমার নিষ্ঠারই প্রমাণ।’

২০২৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’। সত্য ঘটনার আধারে নির্মিত ছবিটি শুধু সমালোচক নন, সিনেমাপ্রেমীদের এক অন্য স্বাদ দিয়েছিল। বিশেষ করে রানীর স্বতঃস্ফূর্ত ও আবেগময় অভিনয় দর্শকের হৃদয় জয় করেছিল। এক মায়ের যন্ত্রণা, অসহায়তা, সাহস, আত্মত্যাগ ও অদম্য জেদকে পর্দায় তুলে ধরেছিলেন তিনি। এই পুরস্কারকে তাই সারা দুনিয়ার মাকে উৎসর্গ করেছেন রানী। বলিউডের এই অভিনেত্রী বিবৃতিতে আরও বলেছেন, ‘আমাদের ছবিতে এক মায়ের কাহিনি বলা হয়েছে, যিনি তাঁর সন্তানদের ফিরে পাওয়ার জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন। ছবির কাহিনি আমার হৃদয়কে চূর্ণবিচূর্ণ করেছিল। সত্যিই সন্তানের প্রতি একজন মায়ের ভালোবাসা হয় শর্তহীন। মা হওয়ার পর তা আমি অনুভব করেছি। তাই এই জয়, এই ছবি আমার জন্য অত্যন্ত আবেগের এবং ব্যক্তিগত। আমরা ছবির মাধ্যমে এটাই তুলে ধরতে চেষ্টা করেছিলাম যে একজন মা তাঁর সন্তানের জন্য পাহাড়কেও নাড়িয়ে দিতে পারেন। একজন মা-ই পারেন দুনিয়াকে এক সুন্দর জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে।’

রানী তাঁর এই সাফল্য ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ভোলেননি। অনুরাগীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘সারা দুনিয়ায় আমার যত অনুরাগী আছেন, তাঁদের আবারও ধন্যবাদ জানানোর জন্য এটা সঠিক সময় বলে আমার মনে হয়। আমার ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে তাঁরা আমাকে নিরলসভাবে সমর্থন করে এসেছেন। আপনাদের শর্তহীন ভালোবাসা আর সমর্থন আমার কাছে সব; ভালো কাজ করতে প্রেরণা জোগায়। আপনারা আমাকে সব ধরনের চরিত্রে ও কাহিনিতে আপন করে নিয়েছেন, আর আমার জন্য এটা অনেক বড় বিষয়। আপনাদের ব্যতীত আজ আমি কিছুই হতে পারতাম না।’
১৯৯৬ সালে বাংলা সিনেমা ‘বিয়ের ফুল’ দিয়ে অভিনয়জীবন শুরু করেছিলেন রানী। এই ছবির পরিচালক ছিলেন তাঁর বাবা রাম মুখোপাধ্যায়। একই বছরে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর প্রথম বলিউড ছবি ‘রাজা কি আয়েগি বরাত’। সামনে শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘কিং’ ছবিতে আসতে চলেছেন রানী। এ ছাড়া ‘মর্দানি’র তৃতীয় কিস্তিতেও তাঁকে দেখা যাবে।