রপ্তানি সংশ্লিষ্ট ঋণসুবিধা ফের চালুর আবেদন জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে বেক্সিমকো।
চিঠিতে জানানো হয়েছে, রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়ে গেছে বেক্সিমকো। কারণ, তাদের হাতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ চলতি পুঁজি নেই। ফলে ব্যবসা হারানোর উপক্রম হয়েছে।
সার্বিক অবস্থা উল্লেখ করে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট ঋণসুবিধা ফের চালুর আবেদন সম্বলিত চিঠিটি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের কাছে পাঠিয়েছে বেক্সিমকোর টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল বিভাগ। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর পাঠানো চিঠিতে বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রপ্তানিমুখী উৎপাদন শুরু করতে না পারলে অচিরেই ব্যবসা হারাবে তারা। ফলে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বেক্সিমকো গোষ্ঠীর রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা লুটপাট এবং আগুন দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার মতো চলতি পুঁজি তাদের হাতে নেই। ফলে অনেক ক্রেতা বেক্সিমকো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছে না তারা।
চিঠিতে বেক্সিমকো আরও জানায়, আগস্ট মাসে শ্রমিকদের মজুরি দিতে ৬৯ কোটি পাঁচ হাজার টাকা প্রয়োজন ছিল। জনতা ব্যাংক সে লক্ষ্যে ৫৫ কোটি টাকা ঋণ দেয় তাদের। বাকি অর্থ কাঁচামাল আমদানির জন্য আলাদা করে রাখা তহবিল থেকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেক্সিমকো গোষ্ঠীর নিয়মিত ঋণসুবিধা বন্ধ থাকায় সেপ্টেম্বর মাসের মজুরি পরিশোধ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের মজুরি পরিশোধে ৬৫ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে শিল্পগোষ্ঠীটি।
এ পরিস্থিতিতে বেক্সিমকো গোষ্ঠীর যে রপ্তানি আয় এরই মধ্যে এসেছে এবং আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত যে রপ্তানি আয় আসার কথা, তা থেকে বেক্সিমকো গোষ্ঠীকে সেপ্টেম্বর মাসের মজুরি বাবদ জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ৬৫ কোটি টাকা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।
জনতা ব্যাংকের কাছে বেক্সিমকো গোষ্ঠী যেসব সুবিধা চেয়েছে সেগুলো হলো—৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব বকেয়া সুদবিহীন ব্লক হিসেবে স্থানান্তর; দায় পরিশোধের জন্য ১০ বছর সময় দেওয়া; স্থানীয় পর্যায়ে বস্ত্র ও অ্যাকসেসরিজ সরবরাহে ১০ শতাংশ হারে বিল ডিসকাউন্ট সুবিধা ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত, গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিল্পগোষ্ঠীটির ব্যাংক হিসাবের তথ্যও তলব করা হয়েছে।