চীনের উহান প্রদেশের হুনানের সামুদ্রিক মাছের পাইকারি বাজারের পশমি কুকুর থেকে করোনা মহামারি উৎপত্তি সংক্রান্ত তথ্য মিলেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের তিনজনের একটি দল এ তথ্য জানিয়েছে। খবর: দ্য আটলান্টিক, নিউইয়র্ক টাইমস।
এ শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারিটি অবৈধভাবে বেচাকেনা করা অসুস্থ বন্যপ্রাণী থেকেই উৎপত্তি হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
চীনের উহান প্রদেশের একটি বাজারের কিছু কুকুরের জীনগত নমুনার তথ্য আন্তর্জাতিক ডাটাবেজে প্রকাশ করা হয়। পরে বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে জানতে চাইলে তা মুছে দেওয়া হয়। হুনানের ওই সামুদ্রিক মাছের পাইকারি বাজারে এবং এর আশপাশ থেকে প্রাণীর সোয়াব নমুনা সংগ্রহ শুরু হয় ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে। পরে অবশ্য চীন সরকার ওই বাজার বন্ধ করে দেয় এবং সব প্রাণী সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে গবেষকেরা স্যাতসেতে দেয়াল, মেঝে এবং পশু বহন করা লোহার খাঁচি ও ক্যারেট থেকেও নমুনা সংগ্রহ করেন।
ওইসব নমুনায় করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ গবেষকদল প্রাণীর নমুনায় করোনার উপস্থিতি পায়। এর বড় অংশ ছিল র্যাক্কুন কুকুরের। এই প্রাণী ও বাজারের জিনিসপত্রে পাওয়া জিনগত নমুনা অবশ্য প্রমাণ করে না যে, ওই কুকুর নিজেই সংক্রমিত হয়েছিল। কুকুর যদি নিজেও সংক্রমিত হয়ে থাকে, এর দ্বারা এটি প্রমাণিত নয় যে মানুষের শরীরে তাদের থেকে করোনা ছড়িয়েছে। অন্য প্রাণী থেকেও মানুষের শরীরে এসে থাকতে পারে। এমনকি কোনো মানুষের শরীরে সংক্রমণ থেকেও ভাইরাস ওই কুকুরের শরীরে গিয়ে থাকতে পারে।
তবে তিন বিজ্ঞানীর ওই দলটি বলছে, এটি প্রমাণিত যে, করোনা ভাইরাসের জীনগত নমুনা যেখানে পাওয়া গেছে, র্যাক্কুন কুকুরেরও জীনগত নমুনা সেখানে মিলেছে। এবং বন্যপ্রাণী থেকে মানুষের শরীরে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে তাও অনেকখানি প্রমাণিত। তারা পুরো গবেষণা প্রতিবেদনটি এখনও প্রকাশ করেননি, দ্য আটলান্টিক শুধু বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে।
নতুন এই গবেষণা করোনার উৎপত্তির প্রশ্নের জবাব না দিতে পারলেও এ নিয়ে চলমান আলোচনায় বড় ধরনের ঝাঁকুনি দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও চীনের উহানের গবেষণাগারে করোনাভাইরাসের সৃষ্টির তত্ত্বটি মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের কারণে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে হালে পানি পেয়েছে। রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে সম্প্রতি এ নিয়ে শুনানিও হয়েছে।