উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়াটি এখনও ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার চেয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলেছে, সরকার আইনটি প্রণয়নে অংশীজনের মতামত বিবেচনায় নিয়েছে। তবে এখনও উদ্বেগের জায়গা রয়েছে।
বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘খসড়া উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩-এর ত্রুটিপূর্ণ বিধানসমূহের ওপর পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আইনের খসড়ায় ব্যক্তিগত তথ্যের সংজ্ঞা পরিষ্কার নয়। ব্যক্তিগত তথ্যের সংজ্ঞা স্পষ্ট থাকতে হবে। নয়তো অপব্যবহার ও উদ্দেশ্যমূলক ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া খসড়ায় উপাত্ত সুরক্ষা বোর্ড গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এ বোর্ড সরকারই গঠন করবে। বোর্ড সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে। কারণ সরকারের হাতেই যদি নিয়ন্ত্রণ থাকে, তাহলে সরকার যখন ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার করবে, যা অসম্ভব নয়; তখন পরিত্রাণ পাওয়ার সুযোগ থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে খসড়ার বিষয়ে কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম। তিনি বলেন, আমরা খসড়া আইনে মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরার বিধান অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিলাম। সুপারিশ আংশিকভাবে গৃহীত হয়েছে। আমাদের সুপারিশের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন আশা করি। আমরা ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩’ নামের পরিবর্তে ‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন ২০২৩’ করার পরামর্শ দিচ্ছি। ব্যক্তিগত উপাত্তের সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশও আমরা করেছিলাম। দুঃখজনক যে, আইনটি শুধু ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষার আইন হলেও ব্যক্তিগত উপাত্তের একটি অর্থবহ সংজ্ঞা এখনও অন্তর্ভুক্ত হয়নি। টিআইবি বেনামি এবং ছদ্মনামযুক্ত উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য করার পরামর্শ দিয়েছিল, যা বাস্তবায়ন হয়নি।
মনজুর-ই-আলম বলেন, উপাত্ত সংশোধন এবং প্রত্যাখ্যানের আগে উপাত্তধারীর আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দানের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আমাদের প্রস্তাবটি যথাযথভাবে স্বীকার করা হয়নি। আমাদের আগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।
খসড়ার পর্যালোচনা পর্ব উপস্থাপন করেন টিআইবির ডেটা প্রোটেকশন অফিসার তরিকুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন সংস্থার উপদেষ্টা সুমাইয়া খায়ের।