ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এফডিসি গেট খুলে দেওয়ার প্রথম দিনেই তীব্র যানজটের সম্মুখীন হলো যাত্রীরা। বুধবার (২০ মার্চ) দুপুর ২টার পর এই অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রথম দিকে গাড়ির সংখ্যা একটু কম থাকলেও বিকেল সাড়ে ৫টার পর গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। হাতিরঝিল-এফডিসি মোড় থেকে যানজট চলে যায় র্যাম্প হয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে।
দেখা গেছে, বিমানবন্দর-বনানী থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে এসে গাড়িগুলো এফডিসি মোড় নামছে। সেখান থেকে গাড়িগুলো চারটি গন্তব্য— তেজগাঁও, হাতিরঝিল, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার দিকে যাচ্ছে।
এফডিসি অংশের র্যাম্প শেষ হয়েছে মহানগর হাঁস-মুরগি বাজারজাতকরণ সমবায় সমিতির লিমিটেড ভবনের সামনে। এর প্রায় ১২০ মিটার দূরেই হাতিরঝিল-এফডিসি মোড়। উড়ালসড়ক থেকে নেমে আসা ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার, ছোট ট্রাক, পিকআপ, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মিনি বাসগুলোকে র্যাম্প দিয়ে নেমে এই মোড়ের দিকে যেতে হচ্ছে। গাড়িগুলো ওই মোড় হয়ে বাঁয়ে তেজগাঁওয়ের দিকে, সোজা হাতিরঝিলের দিকে, ডানে মগবাজারের দিকে ও ইউ টার্ন নিয়ে সোনারগাঁও-কারওয়ান বাজারের দিকে যাচ্ছে।
ফেসবুকের ট্রাফিক এলার্ট গ্রুপে দেখা গেছে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উপরে থাকা অসংখ্য ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ও যাত্রী পোস্ট করে জানিয়েছেন তারা তেজগাঁও পর্যন্ত জ্যামে আটকে আছেন। এখান থেকে বের হতে অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগছে প্রতিটি গাড়িকে।
ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আমিসহ আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজ করছি। আমরা সচিব (সেতু সচিব) স্যারের সঙ্গে এর আগেও কথা বলেছি এবং প্রকল্পের যে পিডি আছেন তার সঙ্গেও কথা বলেছি। আমরা বলেছিলাম, আপনারা র্যাম্প চালু করার আগে অবশ্যই বাঁ পাশের লেন ক্লিয়ার করে দেবেন। ইউটার্ন এবং মাঝখানের আইল্যান্ড ভাঙার কথা বলেছিলাম। তারা এতদিনে এ কাজটা করতে পারেননি। এজন্য আজকে এখানে যানজট তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, আইল্যান্ড ভাঙার কাজ আজ রাতেই শুরু করবে। যেহেতু র্যাম্পটি আজ চালু হয়েছে তাই গাড়ির চাপও বেশি। এটি নিয়ন্ত্রণে সব অফিসাররা রাস্তায় নেমে কাজ করছেন। আমরা অনেকটা প্রেশার কমিয়েছি। তারা (এলিভেটেড কর্তৃপক্ষ) যদি এটা দুই দিনের মধ্যে ঠিক করে না দেয় তাহলে আমাদের পক্ষে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে।
এর আগে, আজ সকালে এই এক্সিট র্যাম্পের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এই অংশের দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। তিনি এটিকে দেশবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার বলে আখ্যা দেন।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশ (সাড়ে ১১ কিলোমিটার) উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এই অংশে যান চলাচল শুরু হয়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২ দশমিক ৫১ শতাংশ। এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে তিন চাকার গাড়ি (থ্রি-হুইলার), মোটরবাইক, বাইসাইকেল, পথচারী চলাচল করতে পারে না।