উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে ঘরবাড়িতে ফাটল, ৬০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ

0
120
প্রায় ৬০০ ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে - এএনআই

ভারতের উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ এলাকায় ঘরবাড়িতে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬০০ ঘরবাড়িতে বসবাসকারীদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরটি ধীরে ধীরে মাটিতে দেবে যাচ্ছে।

শুক্রবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী জানান, ফাটল দেখা দেওয়া প্রায় ৬০০ ঘরবাড়িতে বসবাসকারীদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য বড় বড় আশ্রয় শিবির খোলা হবে। খবর এনডিটিভি ও বিবিসি বাংলা।

দেবে যেতে থাকা শহরটির অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর ভিডিও কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী সাংবাদিকদের বলেন, ‘জীবন বাঁচানো আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়িতে বসবাসরতদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

জোশীমঠ শহর হয়েই হিন্দুদের পবিত্র চারধাম যাত্রা করতে হয়। প্রতিবছর লাখ লাখ তীর্থযাত্রী ওই চারধাম যাত্রা করেন। ওই যাত্রার জন্য যে রাস্তা চওড়া করার কাজ চলছিল, তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জোশীমঠ এলাকায় সব ধরনের নির্মাণকাজও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব হোটেলে ফাটল দেখা গেছে, সেগুলোতে পর্যটকদের থাকা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

যারা এখনও নিজেদের বাড়িতেই রয়েছেন, তাদের সবসময় এই আতঙ্কের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে যে হঠাৎ করে যেকোনো সময় তাদের বাড়িঘর ধসে যেতে পারে। এমনকি প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেও বৃষ্টি পড়লেই তারা বাড়ির বাইরে চলে যাচ্ছেন, কারণ বৃষ্টিতেই ভূমিধসের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

ঘরবাড়ির পাশাপাশি রাস্তাঘাটেও দেখা গেছে বড় ফাটল – এনডিটিভি

উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের প্রধান রঞ্জিত কুমার সিনহা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যাতে যেসব পরিবারের বাড়িতে বড়সড় ফাটল হয়েছে বা যাদের বাড়ি একেবারেই থাকার অযোগ্য হয়ে গেছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে।’

সর্বশেষ বড় ফাটলগুলো নজরে আসে বৃহস্পতিবার রাতে। তবে গত অক্টোবরে প্রবল বর্ষণের সময় থেকেই জোশীমঠে ঘরবাড়ি আর রাস্তায় ফাটল দেখা দিতে থাকে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হিমালয়ের নাজুক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর এবং অন্যান্য নির্মাণকাজের চাপ পাহাড় আর নিতে পারছে না।

স্থানীয় অ্যাক্টিভিস্ট অতুল সাতি বলেন, ‘শুধুমাত্র জোশীমঠ এলাকা নয়, পুরো উত্তরাখণ্ডের পার্বত্য এলাকার পরিস্থিতি একইরকম। এই অঞ্চলের পাহাড়গুলো খুবই নাজুক, গোটা হিমালয়ই তো খুব নতুন পাহাড়। এরই ওপরে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় সহ্য করতে হচ্ছে এই অঞ্চলকে।’

জোশীমঠ শহরটি কেন ধীরে ধীরে দেবে যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী ভূতাত্ত্বিক জরিপ, ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট এবং আইআইটি রূরকির বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.