আফ্রিকার দেশ উগান্ডাকে নতুন ঋণ দেওয়া বন্ধ রাখবে বিশ্বব্যাংক। ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশটিতে সমকামী, উভকামী ও রূপান্তরকামীদের (এলজিবিটিকিউ) বিরুদ্ধে কঠোর আইন করায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, উগান্ডায় পাস হওয়া এলজিবিটিকিউ–বিরোধী আইনটি বিশ্বব্যাংকের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এতে আরও বলা হয়েছে, উগান্ডায় বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পগুলোয় বৈষম্য দূর করা এবং যৌন ও লৈঙ্গিক সংখ্যালঘুদের রক্ষায় নেওয়া ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে পর্যালোচনা করতে হবে। তার আগপর্যন্ত দেশটির প্রকল্পগুলোয় ঋণ দেওয়া বন্ধ থাকবে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার পথে দারিদ্র্য দূর করার ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তখনই সফল হবে, যখন এতে জাতি–লিঙ্গ–যৌনতানির্বিশেষে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে। বিশ্বজুড়ে আমাদের কাজের মূলে রয়েছে অন্তর্ভুক্তি আর বৈষম্য দূর করার চেষ্টা। উগান্ডায় এলজিবিটিকিউ–বিরোধী আইন সেই চেষ্টা দুর্বল করে দেবে।’
এর আগে গত মে মাসে উগান্ডার এলজিবিটিকিউ–বিরোধী আইন নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। তখন বলা হয়েছিল, এই আইন ঋণদাতা সংস্থাটির মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এরপর গত জুন মাসে বিশ্বব্যাংকের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন অজয় বাঙ্গা। এরপর উগান্ডার এ আইনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিতে নাগরিক গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে চাপের মুখে পড়েন তিনি।
উগান্ডায় গত মে মাসে পাস হয় অ্যান্টিহোমোসেক্সুয়ালিটি বিল ২০২৩। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউয়ারি মুসেভিনির সই করার মধ্য দিয়ে বিলটি আইন হিসেবে কার্যকর করা হয়। নতুন এই আইনে সমকামিতার শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর বারবার সমকামিতায় জড়ালে হতে পারে মৃত্যুদণ্ড।
নতুন এই আইনের কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ওই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, এই আইন ‘সর্বজনীন মানবাধিকারের দুঃখজনক লঙ্ঘন’। আইনটি প্রত্যাহার করা না হলে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে উগান্ডাকে দেওয়া সহায়তা ও বিনিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।