ইসরায়েলি বিমান হামলায় কোমায় ফুটবলার সেলিন

0
13

ইসরায়েলি হামলায় গুরুতর আহত হয়ে কোমায় চলে গেছেন লেবাননের ১৯ বছর বয়সী নারী ফুটবলার সেলিন হায়দার। বৈরুত ফুটবল একাডেমির (বিএফএ) মিডফিল্ডার সেলিন এই মৌসুমে দলের অধিনায়কত্ব করার কথা ছিল। তবে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় তার স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে।

বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠ শিয়া এলাকায় নিজের বাড়িতে ইসরায়েলি হামলার শিকার হন সেলিন। মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে এখন তিনি বৈরুতের সেন্ট জর্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লেবানন অনূর্ধ্ব-২০ দলের এই ফুটবলারকে রাখা হয়েছে চিকিৎসকদের ‘ইনডিউসড কোমা’য়।

পড়শোনা ও ফুটবল প্রশিক্ষণের জন্য বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ফিরে আসতে হয়েছিল সেলিনকে। সেলিনের বাবা আব্বাস হায়দার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ‘পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের জন্য সেলিনকে দক্ষিণ বৈরুতে ফিরতে হয়েছিল। বোমা বর্ষণ তীব্র হলে বা বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হলে সে বাইরে চলে যেত, কিন্তু রাতের বেলা ঘুমানোর জন্য বাড়ি ফিরত।’

ছবি- এএফপি

ছবি- এএফপি

গত শনিবার নতুন করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেওয়ার পর, সেলিনকে সতর্ক করেন তার বাবা। নির্দেশ শুনে বাড়ি ছেড়ে গেলেও স্ত্রীর কাছে খবর পান যে সেলিন হাসপাতালে।

ইসরায়েলি বিমান হামলায় গুরুতর আহত সেলিন হায়দারের রক্তাক্ত ও নিথর দেহের ছবি লেবাননের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। সেলিনের মা সানা শারহুর এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘হামলাটি খুব কাছে হয়েছিল, আর সে মাথায় আঘাত পায়। আমার মেয়ের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে, তার খুলি ভেঙে গেছে।’

সানার কণ্ঠে ছিল গভীর বিষাদ। তিনি জানান, ‘ঘটনার কিছুক্ষণ আগে সেলিন তাকে একটি বার্তা পাঠিয়ে বলেছিল তার পছন্দের খাবারটি তৈরি করতে। কিন্তু এক ঘণ্টা পর সেলিনের এক বন্ধু ফোন করে জানায়, সে আহত হয়েছে। তবুও মায়ের আশার সুর, আমার মেয়ে একজন বীর। সে শক্তিশালী। সে আবার উঠবে এবং খেলায় ফিরবে।’

সানা আরও বলেন, ‘সে স্বপ্ন দেখত বিদেশে খেলার। বলত, রোনালদো আর মেসির মতো হতে চায়। সে তারকা হতে চেয়েছিল, চেয়েছিল সবাই তার কথা বলুক।’

কিন্তু এখন সবাই তার কথা বলছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। শারহুরের কণ্ঠে হতাশা, ‘এখন সবাই তার কথা বলছে, কারণ সে এমন এক যুদ্ধে আহত হয়েছে, যার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তারা তার স্বপ্নকে হত্যা করেছে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.