১৯৮০ সালে চট্টগ্রামে ইলেক্ট্রো মার্টের যাত্রা। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুন নেওয়াজ সেলিম বিদেশ থেকে পণ্য এনে বিক্রি করতেন। পরবর্তী সময় তাঁর তিন সহোদর মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ নুরুচ্ছাফা মজুমদার ও মো. নুরুল আফসার ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটিকে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় সাত হাজার কর্মী রয়েছেন।
সাধারণ মানুষের চাহিদাকে গুরুত্ব
ইলেক্ট্রো মার্টের হাত ধরে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করে কনকা রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার, যা এখন মানুষের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে। বাজারে কনকা ব্র্যান্ড রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার গ্রাহকদের কাছে আস্থা ও বিশ্বস্ততার অন্য নাম। আমদানির মাধ্যমে দেশে ব্যবসা শুরু করলেও কনকা ও গ্রির মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের গায়ে এখন ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্রেডমার্ক লাগিয়েছে ইলেক্টো মার্ট।
এগিয়ে চলা
২০১৮ সালে সোনারগাঁয়ে কারখানা স্থাপন করে প্রথমে কনকার সঙ্গে এবং ২০১৯ সালে গ্রির সঙ্গে যৌথ উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি। দেশে বাজার দখলের পাশাপাশি নতুন কারখানায় উৎপাদিত টিভি, ফ্রিজ, এসি ছাড়াও মাইক্রোওয়েভ ওভেন, কুকার, ওয়াশিং মেশিন, ফ্যানসহ সব ধরনের হোম অ্যাপ্লায়েন্স রপ্তানির পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আফসার। তিনি বলেন, ‘কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে রপ্তানি শুরু করার লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা।’
উন্নত প্রযুক্তির পণ্য
বাংলাদেশে ইলেক্ট্রো মার্টেই প্রথম ফ্রিজে ডোর অ্যালার্ম সিস্টেম প্রবর্তন করেছে। উন্নত মানের কারণে বিএসটিআই–এর ফাইভ স্টার রেটিং পেয়েছে ব্র্যান্ডটি। এয়ার কন্ডিশনারের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি এখন শীর্ষে। এসিতে অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল ফিল্টার ও আইফিল টেকনোলজি যোগ হয়েছে, যা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে সক্ষম। কনকা, হাইকো ও গ্রি ফ্রিজের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় একে এনে দিয়েছে বাজার-খ্যাতি ও বিশেষ সুনাম।
অনেকেই ফ্রিজের মধ্যে অনেক ধরনের খাবার একসঙ্গে স্টোরেজ করেন। কিন্তু প্রতিটি খাবারের স্বাদ ও গন্ধ ভিন্নধর্মী। কিছুদিন ফ্রিজের মধ্যে খাবার রাখার পর দেখা যায় খাবারের প্রকৃত স্বাদ ও গন্ধ ঠিক থাকে না। কনকা ফ্রিজের অ্যাকটিভেটেড কার্বন ডিউরোলাইজার প্রযুক্তির ফলে এক খাবারের গন্ধ আরেক খাবারে মিশতে দেয় না। দীর্ঘদিন পর্যন্ত খাবার ভালো থাকে। কনকা ফ্রিজ ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখেই ফ্রিজগুলোয় ওয়াইডেস্ট ও ডিপেস্ট ডিজাইন করেছে। যার কারণে ফ্রিজের ভেতরে জায়গা নিয়ে চিন্তা করার আর কোনো সুযোগ নেই। ফ্রিজের সবজি বাক্সের মধ্যে সবজিগুলো যাতে দীর্ঘদিন ফ্রেশ থাকে, সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে কনকা ফ্রিজে হিউমিডিটি কন্ট্রোলার নামক টেকনোলজি যুক্ত করা হয়েছে। ভোল্টেজ আপ–ডাউনের কারণে অনেক এলাকায় ফ্রিজ চালাতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কনকা ফ্রিজে রয়েছে ওয়াইড ভোল্টেজ রেঞ্জ।
ইলেকট্রিক ফ্লাকচুয়েশন বা শর্ট-সার্কিটের কারণে অনেক সময় দেখা যায়, ফ্রিজে বড় ধরনের ক্ষতি হয় এবং যেকোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই কনকা ফ্রিজে ডাবল ইলেকট্রিক প্রটেকশন দেওয়া হয়েছে। ফলে ইলেকট্রিক শর্ট-সার্কিট অথবা ফ্লাকচুয়েশন রেটে ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে না। ফ্রিজে ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ট্রি ফাঙ্গাল ডোর গ্যাসকেট অ্যাডজাস্ট থাকার কারণে ব্র্যান্ডটির ফ্রিজের দরজায় কোনো ফাঙ্গাল হয় না। এটি ১০০ পার্সেন্ট এয়ার টাইপ থাকবে বাইরের বাতাস ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং ভেতরের বাতাসও কোনোভাবে বাইরে যাবে না। কনকা ফ্রিজে রয়েছে ভিটামিন ফ্রেশ টেকনোলজি। বাগানে সবজি যেমন ফ্রেশ ও ভিটামিনসমৃদ্ধ থাকে, ফ্রিজের ভেতরের ফলমূল ও সবজিও থাকবে তেমনই ফ্রেশ।
বাংলাদেশে কনকাই প্রথম ফ্রিজের মধ্যে ডোর অ্যালার্ম টেকনোলজি নিয়ে এসেছে। ৩০ সেকেন্ডের বেশি সময় ফ্রিজ খোলা থাকলে দরজা থেকে অ্যালার্ম দিয়ে সচেতনতামূলক বার্তা দেবে। ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ বিলের কথা মাথায় রেখে কনকা ফ্রিজে ইনভার্টার টেকনোলজি যুক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি ফ্রিজেই রয়েছে বিএসটিআই কর্তৃক ফাইভ স্টার রেটিং।
মডেল, দরদাম ও ক্রয় সুবিধা
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ৭০টিরও বেশি মডেলের ফ্রিজ রয়েছে। দাম ১২ হাজার ৫০০ থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে। ৩৫টি ব্যাংকের ক্রেডিট, ডেবিট কার্ডসহ নগদ এবং ৩ থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে কেনার সুযোগ রয়েছে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে একটি কিনলে একটি ফ্রি অথবা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় এবং বিশেষ উপহারও থাকছে ক্রেতাদের জন্য। কনকা, হাইকো ও গ্রি ব্র্যান্ড ফ্রিজের কমপ্রেসরের ১০ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি রয়েছে। অন্যান্য যন্ত্রাংশের রয়েছে পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টি। তা ছাড়া পাঁচ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সেবাও দেওয়া হচ্ছে। ফলে নিয়মিত সার্ভিসিং হবে অনেক সহজ।