বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অতিধনী ইলন মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইলেকট্রিক ভেহিকেলস) কোম্পানি টেসলা চলতি বছরের প্রথম তিন মাস জানুয়ারি–মার্চে সার্বিকভাবে ২ হাজার ৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করেছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। মূলত টেসলার গাড়ি বিক্রি বেড়ে যাওয়ার ফলেই মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আলোচ্য তিন মাসে টেসলার মুনাফা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ শতাংশ কমে ২৫০ কোটি ডলারে নেমেছে। গাড়ির দাম কমায় এবং কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় টেসলার মুনাফা কমেছে। খবর বিবিসির
বারবার দাম কমানোর কারণে মুনাফা কমলেও টেসলা জানিয়েছে, তারা জনপ্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা হাতে নেয়নি। কোম্পানিটি বুধবার বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বলেছে, গাড়ির দামে বিবর্তন চলবে। অর্থাৎ দাম একবার বাড়বে, আরেকবার কমবে—এভাবেই চলবে তাদের ব্যবসা।
বিলিয়নেয়ার বা শতকোটিপতি ইলন মাস্ক এ মাসের গোড়ার দিকে তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে লিখেছেন, ‘আমরা গাড়ি মূল্য নিয়ে যুদ্ধ শুরু করছি না। আমরা শুধু দাম কমিয়ে গাড়ি বিক্রি করছি, যাতে ভোক্তারা তা কিনতে সক্ষম হন।’
টেসলার ত্রৈমাসিক ফলাফল নিয়ে আলোচনার জন্য ডাকা এক কনফারেন্স কলে ইলন মাস্ক জানান, তিনি কম লাভ করে বিক্রি বাড়ানোর কথা ভেবেছেন। এই কৌশলকে তিনি তাঁর বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি টেসলার জন্য ‘সঠিক পছন্দ’ বলে উল্লেখ করেন।
ইলন মাস্ক বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি মুনাফার ভিত শক্তিশালী থাকবে। সুপার চার্জিং ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বচালিত এই গাড়ি বিক্রি অব্যাহত থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা এখানে ভিত্তি স্থাপন করছি। কম লাভে প্রচুরসংখ্যক গাড়ি সরবরাহ করার প্রবণতা ভবিষ্যতের জন্যও ভালো।’ মাস্ক জানান, তিনি আশা করেন যে গাড়ি শিল্প খাতে টেসলার মুনাফা সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে।
গত বছর টেসলা গাড়ির বাজার হিস্যা কমেছে। কারণ, প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলো নিজস্ব ব্র্যান্ডের বৈদ্যুতিক যানবাহনের উৎপাদন শুরু করেছে।
এদিকে টেসলা দ্রুতগতিতে গাড়ি উৎপাদন বাড়িয়েছে, যা চাহিদা ও সরবরাহের তুলনায় বেশি। তারা অবশ্য বলেছে, সরবরাহে গরমিলের কারণে এমনটি হয়েছে।
টেসলার দাবি, দাম কমানো হলে তা গ্রাহকদের এগিয়ে আসতে সাহায্য করবে। এতে অবশ্য আগে যাঁরা বেশি দামে গাড়ি কিনেছেন, তাঁরা ক্ষুব্ধ হতে পারেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩ মাসে টেসলা প্রায় ৪ লাখ ২৩ হাজার বৈদ্যুতিক গাড়ি সরবরাহ করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ শতাংশ এবং এর আগের অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি।