রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ইরানের সঙ্গে সম্পর্কই মস্কোর কাছে বড় অগ্রাধিকার। বিশ্বের চলমান নানা ঘটনা নিয়ে দুই দেশের অবস্থানও প্রায় একই রকম বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তুর্কেমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাতে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর একটি সম্মেলন চলছে। আজ শুক্রবার সম্মেলনের ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন পুতিন।
রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পেজেশকিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আমাদের কাছে একটি বড় অগ্রাধিকারের বিষয়। তারা সফলভাবে উন্নতি করছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা একসঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে আমাদের অবস্থানও বেশির ভাগ সময় এক রকম।’
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ককে ‘আন্তরিক’ বলে বর্ণনা করে মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের অবস্থান একই।’ তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি বেশ জটিল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ চায় না মধ্যপ্রাচ্য স্থিতিশীল হয়ে উঠুক।’
ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা ও বেসামরিক প্রাণহানির কঠোর নিন্দা জানান মাসুদ পেজেশকিয়ান। পাশাপাশি ইসরায়েলের এই হত্যাযজ্ঞে ইসরায়েলকে অব্যাহত সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলায় গাজার ৪২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি লেবাননে স্থল ও বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলে দেশটির সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইরান–সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন। এতে মধ্যপ্রাচ্যে একটি যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেকোনো সময় যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বজুড়ে নানা ঘটনায় দুই দেশের একই অবস্থানের কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া ও ইরানের ওপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। দেশ দুটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই মৈত্রীর সম্পর্ক। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরালো হয়েছে। ধারণা করা হয়, অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সাহায্য করছে তেহরান।
রাষ্ট্রায়ত্ত রুশ সংবাদ সংস্থা রিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বৈঠকে মাসুদ পেজেশকিয়ানকে মস্কো সফরের আমন্ত্রণ জানান ভ্লাদিমির পুতিন। আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। আগামী মাসের শেষে পেজেশকিয়ান মস্কো সফরে যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।