যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের প্রধান জেনারেল ড্যান কেইন বলেছেন, ইরানে অপারেশন মিডনাইট হ্যামার ছিল ১৫ বছরের কাজের ‘চূড়ান্ত পরিণতি।’
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিবিসির
ড্যান কেইন বলেন, সাফল্য অর্জনের জন্য ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোর ডিজাইন, পরিকল্পনা এবং সরবরাহ করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে মোট ছয়টি বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল। হামলা প্রতিহত করার জন্য ইরানিরা চেষ্টা করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের প্রধান আরও বলেন, ইরানের পাহাড়ের গভীরে একটি প্রকল্পের বিষয়ে আমেরিকা প্রথমে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিল। ইউএস ডিফেন্স থ্রেট রিডাকশন এজেন্সি বা মার্কিন প্রতিরক্ষা হুমকি হ্রাস সংস্থার একজন কর্মকর্তা ১৫ বছর ধরে ফোর্দো নিয়ে গবেষণা করছিলেন।
ড্যান কেইন বলেন, ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনাকে টার্গেট করে ‘বাঙ্কার – বাস্টার’ বোমা তৈরি করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ছয় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
তবে, ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দেয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। পরদিন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধবিরতি সম্মতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। পরে ইরানের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।