মুম্বাইয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার শুরু হতে যাচ্ছে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক। দুই দিন ধরে চলা বৈঠকের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, কোনো নেতাকে সার্বিকভাবে জোটের আহ্বায়কের দায়িত্ব নাও দেওয়া হতে পারে। অতীতে রাজনৈতিক জোটে আহ্বায়ক হিসেবে একজনকে রাখার চল ছিল। ইন্ডিয়া জোটের ক্ষেত্রে তা করার সম্ভাবনা কম। খবর এনডিটিভির।
ইন্ডিয়া জোটে যে ১১ জনের সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করা হবে, সেখানে একজন আহ্বায়ক থাকবেন। তাঁর দায়িত্ব থাকবে ১১ জন সদস্যের মধ্যে সমন্বয় রাখা, বৈঠক ডাকা। বিরোধী দলগুলোর কোন নেতা আহ্বায়ক হবেন, তা ঠিক হবে বৈঠকে। পাশাপাশি চেষ্টা চলছে ইন্ডিয়া জোটের লোগো প্রকাশের। তবে মুম্বাইয়ের বৈঠকের সময়েই তা প্রকাশ করা হবে এবং সম্ভাব্য থিম থাকবে দেশপ্রেম।
রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সংযুক্ত মোর্চায় যেমন ছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু কিংবা এনডিএতে জর্জ ফার্নান্দেজ ইন্ডিয়া জোট তেমন কোনো আহ্বায়ক রাখতে চাইছে না সংগত কারণে। কারণটি হলো, সেক্ষেত্রে আহ্বায়ককে সরাসরি এনডিএ’র সর্বাধিনায়ক নরেন্দ্র মোদির প্রতিপক্ষ মুখ হিসেবে দাঁড় করাবে রাজনৈতিক মহল। বিজেপিও এ ব্যাপারে ছায়া যুদ্ধ শুরু করে দেবে। স্বাভাবিকভাবে মাঠে নামার আগেই বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবেন মোদি। তাছাড়া, এর ফলে জোটের নেতৃত্বের প্রশ্নে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক হতে সবচেয়ে আগ্রহী জেডিইউ নেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি আগে থেকেই উদ্যোগী হয়ে সমন্বয়ের কাজ করে চলেছেন বিরোধীদের মধ্যে। পাটনা বৈঠকের আগে বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন নীতীশ। বিরোধী জোটের প্রথম বৈঠকটিও করা হয় পাটনায়। তবে বেঙ্গালুরু বৈঠকে জোটের নামকরণের প্রশ্নে কংগ্রেস বা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের সঙ্গে মতপার্থক্য হয় তাঁর। এতে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন নীতীশ। তারপরেও বিজেপি-বিরোধী রাজনীতিতে সমন্বয়কারী হিসেবে সক্রিয় রয়েছেন তিনি। ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে এনডিএ’র সবচেয়ে পুরোনো শরিক শিরোমণি আকালি দলের সঙ্গেও নীতীশ যোগাযোগ করছেন। ওমপ্রকাশ চৌতালার দলকেও (আইএনএলডি) একই অনুরোধ করেছেন তিনি। আপাতত আইএনএলডি হরিয়ানায় বিজেপির সঙ্গে জোটে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ১১ জনের সমন্বয় কমিটিতে নীতীশ তাঁর দলের সংসদ সদস্য লালন সিংহকে না রেখে নিজেই থাকতে পারেন।
তবে ১১টি বড় দলের শীর্ষ নেতারা পছন্দমতো একজনকে এই কমিটিতে পাঠাবেন। মনে করা হচ্ছে, কোনো দলেরই শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বা নেত্রী নিজেরা সমন্বয় কমিটিতে থাকবেন না। দ্বিতীয় স্তরের নেতৃত্ব থেকে প্রতিনিধি বাছবেন তারা। সেক্ষেত্রে নীতীশের মতো ওজনদার নেতা নিজেই যদি সমন্বয় কমিটিতে থাকেন, সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দল কংগ্রেসের দ্বিতীয় স্তরের কোনো নেতার পক্ষে কমিটির আহ্বায়ক হওয়ায় সমস্যা তৈরি হতে পারে।