ইন্টারনেটের গতিতে এগোলেও ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ

0
201
ইন্টারনেট

ওকলার হিসাব বলছে, বাংলাদেশে গত নভেম্বরে মোবাইল ইন্টারনেটে গড় ডাউনলোড গতি ছিল ১৩ দশমিক ৯৫ এমবিপিএস (মেগাবিট প্রতি সেকেন্ডে), যা এক বছর আগে একই মাসে ছিল ১০ দশমিক ৪২ এমবিপিএস। আপলোডের গতি ছিল ৮ এমবিপিএসের নিচে, যা বেড়ে গত নভেম্বরে ৯ এমবিপিএস ছাড়িয়েছে। ২০২১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩০তম। সেখান থেকে উন্নতি হয়েছে ১১ ধাপ।

উন্নতির কারণ হিসেবে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটররা বলছে, সেবার মান বাড়াতে তারা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। বড় পদক্ষেপটি হলো তরঙ্গ কেনা। ২০২১ ও ২০২২ সালের মার্চে অপারেটরগুলো প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার তরঙ্গ কেনে। এই তরঙ্গের বড় অংশ নেটওয়ার্কে বসিয়েছে তারা। পাশাপাশি অপারেটরগুলো বেজ ট্রান্সসিভার স্টেশন (বিটিএস) বাড়িয়েছে, যা টাওয়ার নামে পরিচিত। টাওয়ারগুলো অপটিক্যাল ফাইবার কেব্‌ল (বিশেষ তার) দিয়ে সংযুক্ত করার হারও বাড়ানো হচ্ছে।

দেশের মোবাইল অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব এস এম ফরহাদ বলেন, ‘দেশের মোবাইল অপারেটররা উৎকৃষ্ট মানের সেবাদানের জন্য সব সময়ই সচেষ্ট থাকে। আমরা সব সময় বলে এসেছি যে আমাদের তরঙ্গস্বল্পতা রয়েছে, যা ভালো ফলের অন্তরায়।’

তিনি বলেন, গত বছরের শুরুতে অপারেটররা শতকোটি ডলারের বেশি ব্যয় করে সরকারের কাছে থেকে যে তরঙ্গ বরাদ্দ নিয়েছে, তা তারা তাদের নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করছে। সে কারণে সূচকে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে।

ওকলার হিসাব বলছে, মোবাইল ইন্টারনেটে গতির দিক দিয়ে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পেছনে আছে নেপাল (১২১) ও আফগানিস্তান (১৪২তম)। ভারত ১০৫, পাকিস্তান ১১৪, শ্রীলঙ্কা ১১৮ ও মালদ্বীপ ২২তম অবস্থানে রয়েছে। তালিকার শীর্ষে আছে কাতার, তাদের গড় ডাউনলোড গতি ১৭৬ এমবিপিএস।

ওকলা গত নভেম্বরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতির চিত্রও তুলে ধরে। সেখানেও বাংলাদেশের তিন ধাপ উন্নতি দেখা যায়। ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১০২তম। ব্রডব্যান্ডে বাংলাদেশের গড় ডাউনলোড গতি ৩৪ দশমিক ৮৫ এমবিপিএস এবং আপলোড গতি ৩৭ দশমিক ৪১ এমবিপিএস। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতিতে বাংলাদেশের পেছনে আছে শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালদ্বীপ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। এগিয়ে আছে ভারত।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে নভেম্বর শেষে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ কোটিতে। আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গ্রাহক প্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি অপারেটরের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিপুল টাকায় তরঙ্গ কেনার পর তা স্থাপন করার সরঞ্জাম কিনতে বিপুল বিনিয়োগ দরকার হয়। অপারেটরগুলো তরঙ্গ নেটওয়ার্কে স্থাপন করছে। বিটিআরসি এ বিষয়ে চাপ দিচ্ছে। সব মিলিয়ে সুফল পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকায় চাহিদামতো টাওয়ার বসাতে পারলে সেবার মান আরও বাড়বে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.