বিক্ষোভে যাওয়ার পথে ছাত্রদল নেতাকে গুলি, অভিযোগ সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

0
133
পায়ে গুলি লাগার পর নরসিংদীর পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান। আজ সোমবার দুপুরে ঘোড়াশাল পৌর সভার দড়িহাওলাপাড়া এলাকায়, ছবি: সংগৃহীত

গুলিবিদ্ধ মোস্তাফিজুর রহমান (৩২) পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা গ্রামের শাজাহান সাজুর ছেলে। পরিবারের সঙ্গে তিনি দড়িহাওলাপাড়ায় বসবাস করেন।

গুলির ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. রুবেল

গুলির ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. রুবেল
ছবি: সংগৃহীত

১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান জানান, ডান পায়ের হাঁটুর নিচে ‘সাসপেক্টেড গানশট ইনজুরি’ (ধারণা করা হচ্ছে গুলিতে আহত) নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান নামের একজন বিকেলে হাসপাতালে এসেছিলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তাঁকে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিএনপি ও ছাত্রদলের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা জানান, ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবি ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পলাশে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ছিল বেলা তিনটায়। ওই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য বেলা আড়াইটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান ও সদস্যসচিব আরিফুল ইসলামসহ আরও চার-পাঁচজন। হঠাৎই মো. রুবেলের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেলে করে ছাত্রলীগের ২৫ থেকে ৩০ নেতা–কর্মী সেখানে আসেন। এ সময় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিষয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। বাগ্‌বিতণ্ডার মধ্যেই মোস্তাফিজুরসহ তিনজনকে মারধর করেন তাঁরা। একপর্যায়ে রুবেল তাঁর সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করে মোস্তাফিজুর রহমানের ডান পায়ে গুলি করেন। মোস্তাফিজুর মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে তাঁকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়।

আহত পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান ও সদস্যসচিব আরিফুল ইসলাম বলেন, যে স্থানে মোস্তাফিজুর রহমানের পায়ে গুলি করা হয়েছে, সেটি পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের ১০০ গজের ভেতরে। অন্যদিকে মোটরসাইকেলে থাকা সবাই উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মী। তাঁরা সবাই মেয়র আল মুজাহিদ হোসেনের অনুসারী। বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের ভয় দেখাতে ও চাপে ফেলতে মোস্তাফিজুরকে গুলি করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র আল মুজাহিদ হোসেন বলেন, মোস্তাফিজুরের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরটি ফেসবুকে দেখেছেন। এর সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানো ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। সরকারিভাবে তাঁর গানম্যান রাখার কোনো অনুমতি নেই। তাঁর নামে বরাদ্দ বন্দুক নিজের কাছে রাখার লাইসেন্স আছে। রুবেল নামে বেশ কয়েকজন কর্মী আছেন। কোন রুবেলের কথা বলা হচ্ছে, বুঝতে পারছেন না।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রুবেলের পরিচয় উল্লেখ করে জানতে চাইলে মেয়র আল মুজাহিদ বলেন, রুবেল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা তিনি জানেন না।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. রুবেল ফোন ধরেননি।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছেন। কিন্তু বিস্তারিত জানতে পারেননি। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও পাননি। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.