ইউক্রেন যুদ্ধ : রাশিয়াকে ছাড়া সুইজারল্যান্ড সম্মেলন কতটা ফলপ্রসূ হবে

0
86
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ছবি : এএফপি

বিশ্বনেতারা সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেন নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনে আজ শনিবার থেকেই জড়ো হতে শুরু করেছেন। রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধ করতে চাপ দিতে বিশ্বনেতাদের নিয়ে এ আয়োজন কিয়েভের কূটনৈতিক প্রভাবের বড় ধরনের পরীক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। তবে চীনের মতো মস্কোর ক্ষমতাধর মিত্রের অনুপস্থিতিতে এ সম্মেলনের সম্ভাব্য প্রভাব আশানুরূপ না–ও হতে পারে।

ইউক্রেনের এ শীর্ষ সম্মেলনে মিত্রদেশগুলোর অংশগ্রহণই বেশি। এ সম্মেলনে রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি; কিন্তু রাশিয়াকে ছাড়া এ ধরনের সম্মেলন আয়োজন করা অর্থহীন ও সময়ের অপচয় বলে এ থেকে সরে গেছে বেইজিং। এ সম্মেলনে চীন না থাকা মানে বিশ্বমঞ্চে রাশিয়াকে একঘরে করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। এ ছাড়া বর্তমানে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেন অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। এর বাইরে গাজায় ইসরায়েলের হামলার কারণে বিশ্বের মনোযোগ ইউক্রেন থেকে অনেকটাই সরে গেছে।

দুই দিনের এ সম্মেলনে যুদ্ধের ফলে যেসব উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে। যেমন খাদ্য, পারমাণবিক নিরাপত্তা ও সমুদ্রপথে চলাচলের বিষয়টি। এ সম্মেলনের চূড়ান্ত ঘোষণার খসড়ায় রাশিয়াকে আগ্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হতে পারে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ এ সম্মেলনকে অগ্রগতির দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। সুইজারল্যান্ড সফরের আগে তিনি এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে অনেক আলোচনা হবে। তবে খুব বড় বিষয় নয়, এটাই পরিকল্পনা। এটা ছোট্ট একটা চারা, যাতে পানি দিতে হবে। তবে এখান থেকে আরও বড় কিছু আসতে পারে, সে দৃষ্টিকোণও রয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের বুর্গেনস্টকের পাহাড়ের ওপরে একটি রিসোর্টে দুই দিনের সম্মেলনে ১০০টি দেশের প্রতিনিধি ও সংস্থা অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ সম্মেলনের আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ বন্ধ করতে তাঁর শর্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। গত শুক্রবার মস্কোয় তিনি বলেন, কিয়েভ যদি পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর যুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে এবং মস্কোর দাবি অনুযায়ী চারটি প্রদেশ ছেড়ে দেয় তবে তিনি এখনই যুদ্ধ বন্ধ করবেন। তবে কিয়েভ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

জেলেনস্কির পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, এ সম্মেলনের প্রভাব কমাতে মস্কোকে সহযোগিতা করছে বেইজিং। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা অস্বীকার করেছে। চীন বলেছে, তারা অংশ নেওয়ার কথা ভাবত, যদি এতে রাশিয়াকে রাখা হতো।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জাতিসংঘ পরিচালক রিচার্ড গোয়ান বলেন, এ সম্মেলন ইউক্রেনের কূটনীতির সীমাবদ্ধতা দেখিয়ে দিতে পারে।

এ সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসসহ, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, ভারত, তুরস্ক, হাঙ্গেরির প্রতিনিধিরা যোগ দিতে পারেন। ইউরোপের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেছেন, মস্কোর মূল মিত্রের অনুপস্থিতি এ সম্মেলনের প্রভাব কমিয়ে দেবে। তবে এ সম্মেলন থেকে জেলেনস্কি কী আশা করছেন? সুইজারল্যান্ডের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল ওকার বলেন, রুশ আগ্রাসনের শিকার ইউক্রেনের প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতির আরেকটি ছোট পদক্ষেপ এটি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.