একটি নির্বাচনে পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে সাধারণত তিন ধরনের পর্যবেক্ষণ করা হয়। দীর্ঘমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি। পর্যবেক্ষকেরা নির্বাচনে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। পর্যবেক্ষক না থাকলে নির্বাচন হবে না, তা নয়। এতে নির্বাচন–প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয় না।
তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ছাড়া নির্বাচন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তেমন একটা গ্রহণযোগ্যতা পায় না। পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে পর্যবেক্ষকেরা যে প্রতিবেদন দেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পর্যবেক্ষক, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কোনো দেশের নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে থাকে। পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বুঝতে পারে, নির্বাচন কতটুকু অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
বাজেট–স্বল্পতার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠাবে না বলে যেটি বলা হচ্ছে, সেটি মনে হয় আসল কারণ নয়। তারা মালদ্বীপে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে অন্য কারণ থাকতে পারে। ইইউর প্রাক্–নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশ সফর করে গেছে।
নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের সঙ্গে তারা আলোচনা করেছে। সেখান থেকে নিশ্চয় তারা নির্বাচনের সম্ভাব্য পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছে।
এর আগে দলীয় সরকারের অধীন দুটি সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এমন আলোচনাও এসেছে। মনে হয়, এসব মিলিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক মিশন না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইইউ পর্যবেক্ষক দল না পাঠালেও অবশ্য নির্বাচন হবে। এতে নির্বাচন–প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠায়, তাহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, তা সময় বলে দেবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার