আ.লীগের কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ

0
12
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা।
ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা।
 
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যারিস রোডে গণ-অভ্যুত্থান মঞ্চের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাত ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জোহা চত্বরে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এরপর পৌনে ৯টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ প্যারিস রোড হয়ে জোহা চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
 
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, ছাত্রলীগ জঙ্গী, খুনি হাসিনার সঙ্গী, স্বৈরাচারের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও, বিচার বিচার বিচার চাই, স্বৈরাচারের বিচার চাই, ইত্যাদি স্লোগান দেন।
 
সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম আযম সাব্বির বলেন, আমাদের আজকের বিক্ষোভ শুধু ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে না, বরং যাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা এই কর্মসূচি দেয়ার সাহস পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও। সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাকে বেষ্টন করে হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী দেশ থেকে পালিয়েছে। আমরা এর জবাব চাই। এই সমাবেশ থেকে আমরা ঘোষণা দিতে চাই, আগামীর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ কিংবা ফ্যাসিস্টদের দোসর যারাই রাজপথে নামার সাহস করবে ছাত্র জনতা তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, ৫ আগস্টে যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি এই স্বাধীনতাকে কোনোভাবেই ভূলণ্ঠিত হতে দেওয়া যাবে না। এই স্বাধীনতার পেছনে এখনো যদি আওয়ামী দোসররা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় আমরা এর দাঁতভাঙা জবাব দিবো। আমরা এখনো রাজপথ ছেড়ে যাই নাই। দুই হাজার শহীদের রক্তের বদলা নিয়েই আমরা ঘরে ফিরবো। আওয়ামী লীগকে অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই অবিলম্বে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন। খুনি হাসিনাকে দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্রের সুযোগ দেওয়া যাবে না। ছাত্রলীগকে কবর দেওয়া হয়েছে, কোনোভাবেই ছাত্রলীগকে এই দেশে জীবিত করতে দেয়া যাবে না। দ্বিতীয় শাহবাগের নামে এই দেশে যদি আর কোনো মব তৈরি করতে দেওয়া হবে না। ছাত্রলীগকে প্রতিহত করার জন্য বাম-ডান মিলে রাজপথে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি।
 
গণ-অভ্যুত্থান মঞ্চের সভাপতি জায়িদ জোহা বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্রেব্রুয়ারিতে যে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আমরা ঘৃণা ভরে সেটা প্রত্যাখ্যান করেছি। এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়বদ্ধতা। স্বৈরাচার শক্তির বিচার নিয়ে গড়িমসি করতে দেয়া যাবে না। আমরা বলতে চাই এই স্বৈরাচারী দল ষোলো বছর মানুষের ওপরে যেভাবে অন্যায় করেছে, অবিচার করেছে, দুর্নীতি করেছে, লুটপাট করেছে তারা এই দেশে সাংবিধানিক ভাবে কোনো দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারে না। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও যদি আমাদেরকে দেখতে হয় এই স্বৈরাচার দল স্বাধীনভাবে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে তাহলে আমি মনে করি আমাদের শহীদ ভাইদের রক্ত বৃথা। আমাদের সবাইকে একতাবদ্ধ হতে হবে যেন কোনোভাবেই এই স্বৈরাচার শক্তি ফিরে আসার সুযোগ না পায়।
 
বিক্ষোভ সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন গণ-অভ্যুত্থান মঞ্চের সদস্য মো. মামুন সরদার। এ সময় প্রায় বিভিন্ন বিভাগের চার শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.