দ্বিতীয়বারের মতো দেশের আয়কর বা প্রত্যক্ষ কর আদায় এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ১২ হাজার ৯২০ কোটি টাকার আয়কর আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এটি এনবিআরের সাময়িক হিসাব। চলতি মাসের শেষ দিকে চূড়ান্ত হিসাব মিলবে। ২০২১-২২ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকার আয়কর আদায় হয়েছিল।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয়কর বা প্রত্যক্ষ কর আদায়ে এনবিআরের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সাময়িক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, অর্থবছর শেষে আয়কর খাতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৯ হাজার ১৮০ কোটি টাকা ঘাটতি আছে। শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের রাজস্ব আদায়ের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। তাতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি হতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।
প্রত্যক্ষ কর আদায়ে জোর দেওয়ার কথা বলা হলেও গত কয়েক দশকে এই খাতে বড় কোনো সংস্কার হয়নি। ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ দিয়েই আয়কর খাত চলছিল। প্রায় এক দশকের চেষ্টার পর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে নতুন আয়কর আইন চালু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফের) ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের অন্যতম শর্ত হলো—চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে স্বাভাবিক প্রবণতার চেয়ে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ বেশি কর আদায় করতে হবে। কিন্তু এ শর্তপূরণে চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে অতিরিক্ত ৪৮ হাজার কোটি টাকা কর আদায় করতে হবে।
এদিকে গত সাত অর্থবছরে আয়কর আদায় দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৫২ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকার আয়কর আদায় হয়েছিল। সাত বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
এনবিআরের হিসাবে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আয়কর আদায় হয়েছিল ৬২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭২ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭৩ হাজার ৪ কোটি টাকা ও ২০২০-২১ অর্থবছরে আয়কর আদায় হয়েছিল ৮৫ হাজার কোটি টাকা।