নেইমার মাত্র ৩১ বছর বয়সে ইউরোপ ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন সৌদি আরবে। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড এখন ‘হিলালি’, মানে সৌদি প্রো লিগের দল আল হিলালের খেলোয়াড়। নেইমারকে রাজি করাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে আল হিলালকে।
দলবদল ফি ৯ কোটি ইউরো তো আছেই, মৌসুমপ্রতি পারিশ্রমিক দিতে হবে প্রায় ১০ কোটি ইউরো করে। এর বাইরে নেইমারের কিছু চাহিদাও পূরণ করতে হয়েছে আল হিলালকে। যেমন ধরুন, ২৫ কক্ষের বিলাসবহুল বাড়ি, ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের সুইমিং পুল ও তিনটি ‘সনা’। ২৪ ঘণ্টার জন্য একজন গাড়িচালকও থাকবেন নেইমারের জন্য। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপারটি এসব নয়।
সংবাদমাধ্যম এর আগে জানিয়েছিল, আল হিলালের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করার আগে আটটি গাড়ি চেয়েছিলেন নেইমার। তবে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’ উল্টো খবর জানিয়েছে। আল হিলালই নাকি নেইমারকে গাড়িবহর উপহার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। ব্রাজিলিয়ান তারকা শুধু গাড়ির কোম্পানি ও মডেল পছন্দ করেছেন।
নেইমারের গ্যারেজে ফেরারি, অডি, অ্যাস্টন মার্টিন ও ল্যাম্বরগিনি আগেই ছিল। এখন তাঁর গাড়ির সংখ্যা বাড়ল, এ–ই যা! ‘ও গ্লোবো’ জানিয়েছে, সাতটি বিলাসবহুল গাড়ির পাশাপাশি একটি ভ্যান উপহার পেয়েছেন নেইমার। তাঁর নিজের এবং কাছের লোকদের যাতায়াতের জন্যই এই গাড়িবহর।
‘ও গ্লোবো’ জানিয়েছে, নেইমার এই গাড়িবহরের মধ্যে প্রথম যে গাড়ির অর্ডার দিয়েছিলেন, সেটি বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিটি। কনভার্টিবল মডেলের এ গাড়ির ইঞ্জিন ৬৫৯ হর্সপাওয়ারের। ৩.৬ সেকেন্ডে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতি তুলতে পারে। সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৩৩৫ কিলোমিটার, গাড়িটির দাম আড়াই লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা)।
ব্রিটেনের আরেকটি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাস্টন মার্টিনের প্রতি টান আছে নেইমারের। এই প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা একটি এসইউভি পেয়েছেন নেইমার। ৫৫০ হর্সপাওয়ার ক্ষমতা ইঞ্জিনের। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতি উঠতে সময় লাগে ৩.৩ সেকেন্ড। সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৩১০ কিলোমিটার। দাম ৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা)।
আল হিলালের পক্ষ থেকে নেইমারের পাওয়া তৃতীয় গাড়িটি ল্যাম্বরগিনি হুরাকান মডেলের। ইতালিয়ান কোম্পানির বানানো এই গাড়ি স্পোর্টিং মডেলের। ৬৪০ হর্সপাওয়ার ইঞ্জিনের এই বিলাসবহুল গাড়ির দাম ৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা)। এই তিনটি গাড়ির বাইরে নেইমারের গ্যারেজে একই মডেলের আরও চারটি গাড়ি যোগ হবে—মার্সিডিজ এএমজি জি ৬৩। এই গাড়িগুলো এসইউভি মডেলের এবং বিলাসবহুল এসইউভির জগতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
‘ও গ্লোবো’ জানিয়েছে, এখনো নিশ্চিত না হওয়া গেলেও নেইমার সম্ভবত এএমজি মডেলের মার্সিডিজ এসইউভি পাবেন। এই গাড়ির ইঞ্জিন ৫৮৫ হর্সপাওয়ারের, সাড়ে ৪ সেকেন্ডে ১০০ কিলোমিটার গতি তুলতে পারে। প্রতিটি গাড়ির দাম ২ লাখ ৩০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা)। অর্থাৎ চারটি গাড়ির মোট দাম ১০ কোটি ৪ লাখ টাকা। নেইমার একটি ভ্যানও পাবেন। সেটিও মার্সিডিজ বেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের বানানো। তবে মডেল এখনো জানা যায়নি। মোট ৯ জন যাত্রী এই ভ্যানে যাতায়াত করতে পারবেন। ভ্যানের দাম এখনো জানা যায়নি।
আল হিলালে যোগ দেওয়ার আগেই নেইমারের গ্যারেজে ছিল অডি, ফেরারি, অ্যাস্টন মার্টিন ও ল্যাম্বরগিনি। এর মধ্যে অ্যাস্টন মার্টিন ভালকান মডেলের গাড়িটি সারা দুনিয়ায় মাত্র ২৪টি তৈরি করা হয়েছিল। ল্যাম্বরগিনির বানানো ইলেকট্রিক ইউরাস মডেলের গাড়ি, ফেরারি ৪৫৮ স্পাইডার ও অডি আর৮ স্পাইডার আছে নেইমারের গ্যারেজে।