আল্লাহর গজবের কারণেই শেখ হাসিনার পতন হয়েছে: কাদের সিদ্দিকী

0
6
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী।

বিএনপি, জামায়াত বা নতুন কোনো শক্তি নয়; বরং আল্লাহর গজবের কারণেই শেখ হাসিনার পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

রোববার (১৬ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইসির সংলাপে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনকে তার সাংবিধানিক অবস্থান মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান, যা সরকারেরও ওপরে অবস্থান করে। নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার গুরুদায়িত্ব রয়েছে।

গত ১৫ মাস ধরে বর্তমান সরকারের ডাকে আলোচনায় না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সরকারের কোনো আলোচনায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। তখন সরকারের দায়িত্ব শুধু ইসির সিদ্ধান্ত পালন করা। এ ছাড়া, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে করার সিদ্ধান্তটি একটি বড় অসঙ্গতি। ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোটার গণভোটে অংশ না নিলে নির্বাচনই হুমকির মুখে পড়বে। অতীতে নির্বাচন কমিশন সরকারের ইচ্ছা পূরণ করেছে, যা অত্যন্ত খারাপ ছিল। বর্তমান ইসির কাছে সুযোগ এসেছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতন বিএনপি, জামায়াত বা নতুন কোনো শক্তির কারণে হয়নি। বরং এটি ছিল আল্লাহর গজব, যা তার অসন্তুষ্টির ফলে এসেছে।

ক্ষমা না চাওয়ায় জামায়াতকে কোনো সম্মান নয় উল্লেখ করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, আমি খেলাফত আন্দোলনসহ সব ইসলামপন্থি দলকে সম্মান করি। জামায়াতে ইসলামীকেও সম্মান করতাম, যদি তারা মুক্তিযুদ্ধে বিরুদ্ধাচরণের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতো।

নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আপনারা যদি জনগণকে ভোট দিতে পারেন, তাহলেই দেশে শান্তি ফিরবে। শান্তি ফিরলে সুইজারল্যান্ডের চেয়েও শান্ত দেশ হতে পারে বাংলাদেশ।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার গেলে গুন্ডার কোনো জায়গা থাকে না। সাধারণ মানুষের সম্মান ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ইসির হাতে। ইসি সামান্যতম ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারলেও জনগণ কৃতজ্ঞ থাকবে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি এরপর বর্তমান সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান সরকার দেশটাকে একদম বিভক্ত করে ফেলেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার পতন হলেও স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিলুপ্ত হবে না। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাকেই বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে তুলে ধরা হয়।

এনসিপির বিষয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, এরশাদ হঠাও আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমান সবকিছুকে তারা অস্বীকার করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিজের রাজনৈতিক পিতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে দেশকে ভালবাসতে শিখেছি। আপনারা ভালো ভোট করতে পারলে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

একইসঙ্গে তিনি নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারকে বাইরে রেখে ভোট করলে ভালো নির্বাচন করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ ইলেকশন বন্ধ করার চেষ্টা করবে।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.