শহীদ মিনারের স্থপতিকে কেউ স্মরণ করেনি

0
67
মিনারের স্থপতি চিত্রশিল্পী হামিদুর রহমান

আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিনে শহীদ মিনারে জনতার ঢল হলেও কেউ স্মরণ করেননি মিনারের স্থপতি চিত্রশিল্পী হামিদুর রহমানকে। আজিমপুরের পুরান কবরস্থানে ভাষা শহীদদের পাশেই তার কবর হলেও বেলা ১১টা পর্যন্ত দেখা যায়নি কোনো শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিন দেখা যায়, কবরস্থানের দক্ষিণ গেট দিয়ে প্রবেশ করে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে কালো টাইলসে বাঁধাই করা পাশাপাশি সমাহিত তিন ভাষা শহীদের কবর।

প্রথম কবরটি শহীদ আবুল বরকতের। বরকতের পাশেই কবি সুফিয়া কামালের কবর। তার একটু দূরে শহীদ মিনারের স্থপতি শিল্পী হামিদুর রহমানের কবর। বরকতের তিনটি কবর পরেই আব্দুল জব্বারের কবর। সেটিও কালো রঙের টাইলস দিয়ে বাঁধানো। তার তিন সারি সামনে খানিকটা সরু পথ পেরুলে আরেক ভাষা শহীদ শফিউর রহমানের কবর। প্রতিটি কবরের পশ্চিম দিকে সাদা মার্বেল পাথরের ফলক। তাতে লেখা রয়েছে নাম, পরিচয়, জন্ম ও মৃত্যু তারিখ লেখা। এরমধ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ভাষাশহীদদের কবরে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হলেও শহীদ মিনারের স্থপতির কবর একেবারেই ফাঁকা।

অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ করেন শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা অনেকেই। সাধারণ মানুষ বলছেন, সারা বছর মনে করা না হলেও অন্তত একুশে ফেব্রুয়ারির দিন রাষ্ট্রীয়ভাবেই যেন শহীদ মিনারের স্থপতি এবং ভাষা শহীদদের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যবস্থা করা হয়। অবশ্য আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের কবর রয়েছে এটি জানলেও শহীদ মিনার স্থপতির কবর যে এখানেই এটি অজানা বলেও মন্তব্য করেন অনেকেই।

শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা তানভীরুল ইসলাম নামের একজন বলেন, এখানে এমনিতেই দেখতে এসেছি। ভাষা শহীদদের কবরে ফুল থাকলেও শহীদ মিনারের স্থপতির কবর ফাঁকা। তাকে কেউ মনেই করেনি।

জানা যায়, ১৯২৮ সালে পুরনো ঢাকার ইসলামপুরে হামিদুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মির্জা ফকির মোহাম্মদ ও মাতা জামিল খাতুন। হামিদুর রহমানের চাচা ছিলেন ঢাকার শেষ বাইশ পঞ্চায়েতের নেতা মির্জা আবদুল কাদের সরদার। তার বড় ভাই আবু নাসের আহমদ ছিলেন পূর্ববঙ্গ চলচ্চিত্র সমিতির ব্যক্তিত্ব, মেজ ভাই নাজির আহমেদ ছিলেন পূর্ববঙ্গের চলচ্চিত্র বিকাশের উদ্যোক্তা। আর ছোট ভাই সাঈদ আহমদ ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব ও লেখক। ১৯৮০ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৮৮ সালের ১৯শে নভেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে হামিদুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। চিত্রশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর হামিদুর রহমানের পরিবার থেকে তার নামাঙ্কিত হামিদুর রহমান পুরস্কার দেওয়া হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.