দেখতে অনেকটা সার্জিও আগুয়েরোর মতো। আপনি যদি আর্জেন্টাইন সমর্থক হোন, তাহলে তো কথাই নেই। নির্ঘাত মনে হবে আগুয়েরোর কোনো আত্মীয় কিংবা তাঁর সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু দেখতে তেমন মনে হলেও তাঁর খেলার ধরন লিওনেল মেসির মতো। সে জন্য তাঁকে আগামীর মেসিও বলেন কেউ কেউ।
সতীর্থরা অবশ্য মজার ছলে খুদে শয়তান নামে ডাকেন। এই নামটার পেছনেও একটা গল্প রয়েছে। মূলত ড্রিবলিংয়ের সময় নাকি তাঁর মাথায় শয়তান ভর করে। তখন বলটা এমনভাবে বের করে নেন, প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় টেরই পান না। রীতিমতো চোখে ধুলা দেওয়ার মতো। ফুটবলবোদ্ধাদের কেউ কেউ তাঁকে লিটল ম্যাজিশিয়ান বলেও ডাকেন। অল্প দিনে এভাবে ফুটবল দিয়ে সবার মনে জায়গা করে নিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন তরুণ।
তাঁর উত্থানটা সেই আট বছর বয়সেই। তখন ইতালিতে একটি টুর্নামেন্ট খেলতে যান ছোট্ট এচেভেরি। সেখানে ফুটবলের শক্তিধর দেশগুলো থেকে অসংখ্য খুদে খেলোয়াড় এসেছিলেন। কিন্তু অন্যদের টপকে সব আলো কেড়ে নেন এচেভেরি। মাত্র ৬ ম্যাচ খেলে ৯ গোল একাই করেছিলেন তিনি, হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরাও। এর পর থেকে আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা তাঁর পিছু নেন। ২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ দলে ডাক পড়ে তাঁর। এমন সুদিন এচেভেরি কখনোই ভুলবেন না। সব শেষ যখন অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে হ্যাটট্রিক করলেন, তখনও অতীতটা সামনে আনলেন এচেভেরি।
২০২২ সালটা তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য ছিল স্পেশাল। একদিকে দেশের জার্সি জড়ানো, হোক সেটা বয়সভিত্তিক। আরেকদিকে অন্যতম সেরা ক্লাব রিভার প্লেটে ডাক পাওয়া। যদিও আর্জেন্টিনার ক্লাবটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তিটা তাঁর এ বছর থেকেই হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালের শেষ দিকেই তিনি গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে যান। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে চার ম্যাচ খেলেছেন। তবে আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-১৭ দলে তাঁর ঝলক চলছেই। ১৮ ম্যাচ খেলে ১২ গোল করে ফেলেছেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের শিরোপা যদি আর্জেন্টিনা জিতেই নেয়, তাহলে তাঁর গোলই কেবল এই টুর্নামেন্টে হবে সর্বাধিক। যদিও এখনও তিনি ১-এ। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পাঁচ গোল রয়েছে দুই আর্জেন্টাইনের। তাদের একজন এই এচেভেরি। তাঁর সঙ্গে আছেন অগাস্টিন রুবেতো। এই দু’জনের কাঁধে ভর করেই মূলত ছুটছে আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-১৭ দলটি।
কেউ মেসি, কেউ আগুয়েরো কেউ আবার আলভারেজ– যে যাঁর সঙ্গেই এচেভেরিকে মেলান না কেন, তাঁর মধ্যে এমন অনেক গুণ রয়েছে, যা কিনা তাঁকে ব্যতিক্রম এবং এককভাবে সবাইকে মুগ্ধ করে চলেছে। যার মধ্যে ডি বক্স ভাঙার কৌশল, আরেক গুণ হলো ড্রিবলিংয়ের কারিকুরি। এই দুই দক্ষতা যদি আরও শানিত করতে পারেন এচেভেরি, তাহলে আগামীর তারকা হতে তাঁর খুব একটা সময় লাগার কথা নয়।