সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসবাবের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশ সময় আজ মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক সাতটার দিকে আমিরাতের শারজাহ শহরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তিন প্রবাসীর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নে। আজ রাত নয়টার দিকে নিহত ব্যক্তিদের একজনের পরিবার অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নের মতইন গ্রামের মো. রাসেল (৩২), পলতি তারাবাড়িয়া গ্রামের তারেক হোসেন ওরফে বাদল (৪০) ও মো. ইউসুফ (৪৩)। আমিরাতে অবস্থানরত নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা দূতাবাসের মাধ্যমে লাশগুলো দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
নিহত ইউসুফের ছোট ভাই পল্লিচিকিৎসক গোলাম রসুল বলেন, তাঁর বড় ভাই ২৫ বছর ধরে আমিরাতে প্রবাসজীবন কাটাচ্ছেন। তিনি শারজাহ শহরে একটি আসবাব তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। বাড়িতে তাঁর দুই ছেলে আছে। সর্বশেষ পাঁচ বছর আগে তিনি দেশে এসেছিলেন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক তিনটার দিকে কারখানায় আগুন লাগে। ওই ঘটনায় তাঁর ভাইসহ তাঁদের ইউনিয়নের আরও দুজন দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
গোলাম রসুল বলেন, কীভাবে আগুন লেগেছে সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানতে পারেননি। অগ্নিকাণ্ডের পর ওই দেশে থাকা আত্মীয়স্বজন আজ দুপুরে মুঠোফোনে কল করে বিষয়টি গ্রামের বাড়িতে জানান। তাঁর ভাইসহ নিহত তিনজনের লাশ এখনো দেশটির পুলিশের হেফাজতে আছে। সেখানে থাকা স্বজনেরা দূতাবাসের মাধ্যমে লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। তাঁরা এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, একই ইউনিয়নের পাশাপাশি দুই গ্রামের তিন প্রবাসীর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘিরে পরিবার তিনটিতে মাতম চলছে। আহাজারি করে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন নিহত রাসেলের মা শরীফা বেগম ও স্ত্রী খোদেজা বেগম। ছেলের জন্য বিলাপ করছেন ইউসুফের মা মোহাব্বত। কয়েকবার জ্ঞান হারান ইউসুফের স্ত্রী নুর নাহার বেগমও।
ডমুরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বলেন, আমিরাতে আসবাবের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে তাঁর ইউনিয়নের মতইন ও পলতি তারাবাড়িয়া গ্রামের তিন প্রবাসীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঢাকায় থাকায় তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে নিহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিয়েছেন।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগুনে সেনবাগের তিন প্রবাসী নিহত হওয়ার খবর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেনেছেন। তবে এ বিষয়ে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা থানায় কিছু জানাননি।