২০১৮ সাল থেকে অনলাইনে আম বিক্রি করেন আলমগীর হোসেন। করোনাকালে যখন হাট-বাজার বন্ধ হয়ে গেল, দরকার থাকা সত্ত্বেও তখন বাড়ির গরুগুলো বিক্রি করতে পারছিলেন না। এমন সময় আইডিয়াটা তাঁর মাথায় আসে, ‘অনলাইনে যেহেতু আম বিক্রি করি, নিজেদের একটা মার্কেট তো আছেই। ক্রেতাও আছে। সেখানে গরু বিক্রির চেষ্টা করি না কেন?’ ফেসবুকে গরু নিয়ে লিখলেন আলমগীর। কিছুক্ষণের মধ্যে সব কটি গরু বিক্রি হয়ে গেল। এভাবেই শুরু।
তিন বছর ধরে গরুর ব্যবসা করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের এই শিক্ষার্থী। তবে বিক্রিটা হয় মূলত কোরবানির মৌসুমে। রমজানের শুরুতে গরু কিনে কয়েক মাস পর হাটে তোলেন। কিছু গরু আবার কোরবানির সময় কিনে তখনই বিক্রি করেন। এভাবে তিন বছরে প্রায় ৪০টি গরু তিনি বিক্রি করেছেন। প্রতি গরুতে গড়ে ১০ হাজার টাকা করে লাভ হয় বলে জানান আলমগীর।
মোটাতাজাকরণে ব্যবহৃত ক্ষতিকর ওষুধের বালাই থাকে না, পারিবারিকভাবে অর্গানিক উপায়ে লালন-পালন করা হয় বলে গ্রাম থেকে আসা গরুগুলোর ওপরই সবার নজর থাকে। এ সুযোগটাই নেন আলমগীর। ‘মানুষ চায় একটু দাম দিয়ে হলেও ভালো জিনিস কিনতে। এই চাওয়াটাকেই আমি গুরুত্ব দিই,’ বলছিলেন আলমগীর।
এ খাতে শিক্ষিত তরুণদের সম্ভাবনা কেমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমাদের দেশে আগে একটা ধারণা ছিল, গ্রামের স্বল্পশিক্ষিত চাষি-শ্রমিক শ্রেণিই শুধু গরু বিক্রি করে। এখন কিন্তু এই খাতে শিক্ষিতরাও আসছে, ভালো করছে।’ নিজের উদাহরণ টেনে আলমগীর বলেন, ‘আমি যেমন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। আমার কাছে অর্ডার করে মানুষ ভরসা পায় যে ঠিকঠাক ডেলিভারি পাবে। এটা ব্যাপক সম্ভাবনাময় জায়গা। তবে পরিশ্রম বেশি, কষ্ট আছে।’
কষ্ট থাকলেও কাজটা উপভোগ করেন এই তরুণ। গত দুই বছর আমের মৌসুমে কোরবানির ঈদ হওয়ায় ব্যবসাটা ঠিকঠাক করে উঠতে পারছেন না। বলছিলেন, ‘২০২৫ থেকে এ রকম হবে না। তখন অনেক গরু বিক্রি করতে পারব।’