নির্বাচন করতে পারছেন না শাম্মী-সাদিক

0
72
শাম্মী আহমেদ ও সাদিক আবদুল্লাহ

বরিশাল-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আওয়ামী লীগ–মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন। ফলে শাম্মী আহমেদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে পারছেন না।

এদিকে বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতার বিষয়ে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ। ফলে সাদিক আবদুল্লাহও নির্বাচন করতে পারছেন না।

দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও হাইকোর্টে প্রার্থিতা ফিরে পেতে বিফল হয়েছিলেন শাম্মী আহমেদ। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গিয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর ‘নো অর্ডার’ পান শাম্মী আহমেদ। এ অবস্থায় প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াসহ প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশনা চেয়ে তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেছিলেন। আবেদনটি আজ (২ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখানেও শাম্মী আহমেদ বিফল হলেন।

বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ, কিন্তু তাঁকে দল মনোনয়ন দেয়নি। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সাদিক আবদুল্লাহ। তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা, তবে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন জাহিদ ফারুক। অন্যদিকে জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে সাদিক আবদুল্লাহও ইসিতে আপিল করেন। শুনানি শেষে ১৫ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন জাহিদ ফারুকের আপিল মঞ্জুর করে। সাদিক আবদুল্লাহর আপিল নামঞ্জুর করে।

নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিজের প্রার্থিতা ফিরে পেতে এবং জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে সাদিক আবদুল্লাহ হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে দেওয়া ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। একই সঙ্গে সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাঁকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দেন। ফলে তাঁর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ খোলে, তবে জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে সাদিক আবদুল্লাহর করা অপর রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়া–সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন জাহিদ ফারুক। এর ওপর ১৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে সেদিন আদালত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাঁকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। এতে সাদিক আবদুল্লাহর ভোটের লড়াই আটকে যায়। এ অবস্থায় ১৯ ডিসেম্বর চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে সাদিক আবদুল্লাহ আবেদন করেন। এদিকে সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়া–সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনও আবেদন করে। দুটি আবেদনই আজ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে একসঙ্গে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতার ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে বলে আজ আদেশ দিলেন আপিল বিভাগ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.