সংলাপের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক সংসদ নির্বাচন করার আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা জাতীয় সংলাপের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। সেটি হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
গণফোরামের বিশেষ জাতীয় কাউন্সিল-পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা ও বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মফিজুল ইসলাম খান কামালকে দলের সভাপতি ও মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে ড. কামাল হোসেনকে ইমেরিটাস সভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে।
নবনির্বাচিত সভাপতি মফিজুল ইসলাম খান কামাল এ সময় বলেন, ‘পরিস্থিতি সহায়ক হলে গণফোরাম নির্বাচনে অংশ নেবে।’ দলের অন্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রবীণ রাজনীতিক ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘দেশের জাতীয় ঐক্য আরও সুসংহত করে, সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যে এসে তার পর সবাইকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার কথা চিন্তা করা উচিত। এ চেষ্টা আমরা করে যাব। আমরা সব দলকে নিয়ে জাতীয় সংলাপের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের কথা জানিয়েছি। বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শও দিয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে, তার জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা প্রয়োজন। ক্ষমতার মালিক হিসেবে জনগণকে শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। দেশকে বাঁচাতে হলে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। ঐক্যের গুরুত্ব আমরা সবসময়ই দিয়ে থাকি। নীতি ও আদর্শকে কেন্দ্র করেই ঐক্য। সে ঐক্যের ভিত্তিতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে বাঁচাতে যা করা দরকার, আমরা তা করে যাব।’
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দলে তরুণ কর্মী যুক্ত করার কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদেরই চেষ্টা করে যেতে হবে। দেশের এ পরিস্থিতিতে আমাদের মধ্য থেকেই পরিবর্তনের চেষ্টা করে যেতে হবে।’ ‘ক্ষুদ্র কর্মী’ হিসেবে দলের সঙ্গে থাকবেন বলে এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে মফিজুল ইসলাম খান কামাল বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে যাব কি যাব না, তা ভাবছি। পরিস্থিতি দেখছি, পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেব। তবে গণফোরাম নির্বাচনবিমুখ নয়, নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। যদি আমরা দেখি পরিস্থিতি সহায়ক, তাহলে অবশ্যই নির্বাচনে যাব। আর তা না হলে আমরা যাব না।’
দলের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সমাবেশ, অবরোধ, হরতাল– এগুলো দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকারের ওপর যেভাবে দমন-পীড়ন হচ্ছে, তা আমরা সমর্থন করি না। তপশিল ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে দেশের যে পরিস্থিতি, তাতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ আমরা দেখছি না। সাংবাদিকরাই যেখানে নিরাপদ নন, সেখানে প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’