‘আমরা আশাহত, মর্মাহত, দুঃখিত’, এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকের পর আহসান খান চৌধুরী

0
6
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠক হয়, ছবি: সংগৃহীত

বিস্কুট, কেক, জুস, ড্রিংকস প্রভৃতি পণ্যের ওপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) কমানোর জন্য কয়েক দিন ধরে দাবি করে আসছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকও হয়েছে তাঁদের। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি কোনো বৈঠক।

আজ বৃহস্পতিবার এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটি বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমি মনে করি, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। আমরা আশাহত, মর্মাহত, দুঃখিত। তবু বারবার যৌক্তিক দাবি নিয়ে এনবিআরকে বলে যাব।’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠকটি হয়। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহারের দাবির বিষয়ে বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান ব্যবসায়ীরা। এ কারণে তাঁরা আশাহত বলে জানান।

৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর অধ্যাদেশ জারি হয়। তাতে মেশিনে উৎপাদিত বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ, টমেটো সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংকসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, বাড়তি শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা হলে পণ্যের দাম বাড়বে। তিনি হতাশার সঙ্গে বলেন, ‘মুনাফা থাকলে ব্যবসা করব। মুনাফা না থাকলে অন্য ব্যবসার দিকে ধাবিত হব। আমরা ভোক্তার ওপর দাম বাড়াতে চাই না। বাংলাদেশে যত কম দামে বিস্কুট বিক্রি হয়, এত কম দামে আর কোথাও বিস্কুট বিক্রি হয় না।’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠক হয়, ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠক হয়ছবি: সংগৃহীত

আহসান খান চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করছি, ৫ টাকার বিস্কুট যেন ৫ টাকায় বিক্রি করতে পারি। ১০ টাকায় যেন নিতে না হয়।’

এমএসসি এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফ নাসির বলেন, নতুন সম্পূরক শুল্ক আরোপের ফলে ৩৫ টাকার ২০০ এমএলের ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকের দাম ৩ টাকা ৯ পয়সা বাড়বে। আর ৪০ টাকার ২৫০ এমএলের দাম বাড়বে ৩ টাকা ৬৫ পয়সা। ৩ টাকা দাম বাড়লে বিক্রি কমতে পারে ২০ শতাংশ। এতে উল্টো সরকারের রাজস্ব আদায় কমে যাবে।

বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘বিস্কুটের প্যাকেট আমরা আর কত ছোট করব? আমরা দাম বাড়িয়ে প্যাকেটের আকার ঠিক রাখতে চাই না।’ যাঁরা নিয়মিত ভ্যাট দেন, তাঁদের কর কর্মকর্তারা কর দেওয়ার জন্য চাপাচাপি করেন বলে তিনি ক্ষোভ জানান।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহারের বিষয়টি সমাধান না হলে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে বাধ্য হবেন বলে জানান বাংলাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি এম এ হাশেম।

এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তখন এনবিআর চেয়ারম্যান বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন। কিন্তু এখনো বর্ধিত শুল্ক-কর প্রত্যাহার করা হয়নি। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ আবার বৈঠক করলেন এ খাতের নেতারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.