আমদানি করা বড় আকারের মসুর ডালের বাজার আরও চড়া। গত চার-পাঁচ দিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার মতো। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে খাদ্যপণ্যটির দাম বাড়ল ১৫ থেকে ২০ টাকা। নিম্ন আয়ের মানুষই সাধারণত এ ডাল বেশি কিনে থাকেন। দাম বাড়ায় আরও চাপ পড়েছে তাদের ওপর।
শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কলোনি বাজার থেকে মসুর ডাল কেনার পর কথা হয় নির্মাণশ্রমিক আব্দুল কাদেরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের কাজ করি। দিনে বেতন পাই ৫০০ টাকা। কাজ করলে পয়সা পাই, না করলে পাই না। কিন্তু খেয়ে তো বাঁচতে হয়। দুই সপ্তাহ আগে ৯০ টাকায় কিনেছি, এখন দোকানদার মসুর ডালের দাম নিলেন ১১০ টাকা।’ শুধু ডাল নয়, এভাবে সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসারে খরচের চাপ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
শনিবার ঢাকার তেজগাঁও কলোনি বাজার, কারওয়ান বাজার, তেজকুনিপাড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আমদানি করা মসুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে। এর মধ্যে কারওয়ান বাজারে ১০০ টাকায় পাওয়া গেলেও অন্যান্য বাজার ও মহল্লার দোকানে কিনতে গুনতে হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। চার-পাঁচ দিন আগে এ ধরনের ডালের কেজি বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকার আশপাশে। তবে সপ্তাহ তিনেক আগে বিক্রি হয়েছে আরও কম দামে। তখন ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় কেনা যেত বড় আকারের এ ডাল।
এ ছাড়া ১৫ থেকে ২০ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ছোট আকারের দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্যমতে, গত এক মাসের ব্যবধানে মসুর ডালের দাম প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি আমদানি করা মুগ ডাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা আর দেশি মুগের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা দরে।
দেশের চাহিদা মেটাতে স্থানীয় উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতি বছরই ডাল আমদানি করা হয়। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নেপাল থেকে মসুর ডালসহ বিভিন্ন ধরনের ডাল আমদানি করা হয়। কিন্তু ডলারের সংকটে টান পড়েছে আমদানিতে। বাজারে এর প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
তেজকুনিপাড়ার মায়ের দোয়া স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. হেলাল জানান, গত সপ্তাহে পাইকারি পর্যায়ে ৯৮ টাকা দরে আমদানি করা মসুর ডাল কিনেছেন তিনি। এর সঙ্গে পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ রয়েছে। সে কারণে ১১০ টাকার কমে বিক্রি করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ডলারের সংকটে বড় বড় ব্যবসায়ীরা ডাল আমদানি করতে পারছেন না। চাহিদার চেয়ে জোগান কম থাকায় আমদানিকারকরা পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানান এই ব্যবসায়ী।