জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকেই বেশ চাপে আছেন যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি হওয়ার সুবাদে বিগত সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে। এরই অংশ হিসেবে লন্ডনে নিজের খালার এক ঘনিষ্ঠজনের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট উপহার নেওয়ার অভিযোগ মাথায় নিয়ে কয়েক মাস আগে মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। তবে, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আস্থাভাজন হওয়ায় এখনও এমপি হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আছেন বহাল তবিয়তে। এরই মধ্যে খবর, এবার বাংলাদেশে নিজের নামে থাকা এক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়েছে টিউলিপকে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে নিজের নামে থাকা ৬ লাখ পাউন্ড সমমূল্যের ফ্ল্যাটটি নিয়ে পার্লামেন্টের কাছে টিউলিপ ‘মিথ্যাচার’ করেছেন কি না, মূলত সেটি নিয়েই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে।
ডেইলি মেইলের কাছে টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য দাবি করেছেন যে তিনি কোনো অন্যায় করেননি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি বলেছেন, ২০০২ সালে বাবা-মায়ের কাছ থেকে তিনি ফ্ল্যাটটি উপহার হিসেবে পান এবং বৈধভাবে বোন আজমিনার কাছে ২০১৫ সালে এটি হস্তান্তর করেন। ওই বছর ব্রিটিশ এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরই ফ্ল্যাটটি বোনকে দিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি তার।
যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিনিস্টার রেজিস্টারে এমপিদের সম্পর্কে যে তথ্য আছে, সেটি অনুযায়ীও ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটটি পরিবারের সদস্যের সঙ্গে টিউলিপের যৌথ মালিকানাধীন ছিল। পরের মাসেই তিনি সেটি হস্তান্তর করে দেন।
দুর্নীতি বিরোধী কমিশনের (দুদক) অনুরোধে অবশ্য ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশ সরকার জব্দ করেছে। একইসঙ্গে তদন্তও চলছে টিউলিপের বিরুদ্ধে।
এছাড়া, ডেইলি মেইলও গত সপ্তাহে ঢাকা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছ, টিউলিপ সিদ্দিক এখনো ফ্ল্যাটটির মালিক, যেমনটা দুদক দাবি করছে। এখন বাংলাদেশের আদালত সিদ্ধান্ত নেবে, ফ্ল্যাটটির মালিক প্রকৃতপক্ষে কে।
এর আগে, গত মাসে দুদক জানায়, হেবার মাধ্যমে ২০১৫ সালে টিউলিপ ফ্ল্যাটটি আজমিনার কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা করেন। হেবা হলো একটি ইসলামিক নথি। যেটির মাধ্যমে পরিবারের এক সদস্য অন্য সদস্যকে ‘ভালোবাসার’ খাতিরে কোনো কিছু দান করতে পারেন।
তবে, দুদকের দাবি, টিউলিপের হেবা করার বিষয়টিও ‘ভুয়া’। যে ব্যারিস্টারের মাধ্যমে এটি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে তিনি এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। সঙ্গে অভিযোগ করেছেন যে তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।