ঢাক-কাঁসরের বাদ্যে ষষ্ঠী উদ্‌যাপিত, আজ সপ্তমী

0
75
প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মহা ষষ্ঠী পূজা উদ্‌যাপন করছেন ভক্তরা। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী খেলার মাঠে গুলশান-বনানী সর্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন আয়োজিত পূজামণ্ডপে

মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাক ও কাঁসর বাজছে। ধর্মীয় সংগীতও চলছে। ফুল, ধূপ ও আগর সৌরভ ছড়াচ্ছে। একপাশে প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বলছে। বাহারি আলোকসজ্জায় দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমা উজ্জ্বল। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সী পুণ্যার্থী প্রতিমার সামনে আসছেন। খালি পায়ে করজোড় করে দেব-দেবীদের প্রণাম করছেন। প্রণামের সময় অনেকে দেব-দেবীর কাছে মনের বাঞ্ছা প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ আবার দেবী মায়ের সঙ্গে ছবি তুলতেও ভুলছেন না।

রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোয় গতকাল শুক্রবার এমন চিত্রই দেখা যায়। ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে গতকাল শুরু হয়েছে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আজ শনিবার মহা সপ্তমী। ভক্তরা উপবাস রেখে অঞ্জলি দেবেন এবং প্রসাদ গ্রহণ করবেন।

গতকাল সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে ষষ্ঠী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর রমনার কালী মন্দিরে মণ্ডপের পুরোহিত হরিচাঁদ চক্রবর্তী বলেন, ‘সকাল সাতটায় আমাদের মণ্ডপে ষষ্ঠী পূজা শুরু হয়। শেষ হয় সকাল সাড়ে আটটার দিকে।’

পূজার উপকরণ জোগাড় করতেও ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে আয়োজকদের। রমনা দুর্গাপূজার মণ্ডপের সামনে বসে পূজার জন্য খই থেকে ধানের খোসা বাছাই করছিলেন রুমা ঘোষ, পার্বতী ঘোষ ও শুক্লা সরকার। রুমা ঘোষ বলেন, ‘খই বাছাই করছি। এই খই দিয়ে পূজার উপকরণ তৈরি করা হবে।’

গতকাল সকাল থেকেই ঢাকার মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তদের ভিড় করতে দেখা গেছে। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার খামারবাড়িতে পূজামণ্ডপে দুপুরে প্রতিমা দর্শন করতে আসেন শ্রাবন্তী ধর ও শিবানী ধর নামের দুই বোন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে। আজ তাঁদের বাড়ি যাওয়ার কথা। তাই গতকাল ঢাকায় ঘুরে ঘুরে পূজা দেখেন।

সন্ধ্যায় ঢাক-কাঁসরের বাদ্য; সন্ধ্যাপ্রদীপ, ধূপ ও ফুলের সুবাস এবং সংগীত ও নৃত্যের অনুষ্ঠানে মুখর হয়ে ওঠে বনানীর দুর্গাপূজার মণ্ডপ। বাসাবোর রাজারবাগ বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির প্রাঙ্গণে সকালে দেবীর বিহিত পূজা হয়। সকাল থেকেই ছিল ভক্তদের আনাগোনা। বিকেলের দিকে এই সংখ্যা আরও বাড়ে। সন্ধ্যায় মণ্ডপগুলোয় বোধনের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে জাগ্রত করা হয়।

হিন্দুশাস্ত্রমতে, শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে দেবী বাপের বাড়ি বেড়াতে মর্ত্যলোকে এসেছেন। অসুরশক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছিলেন। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হলো এক মহাশক্তির আবির্ভাব। দেবতাদের তেজোরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। আবির্ভূত হওয়ার পর দেবী দুর্গা আসুরিক শক্তিকে বিনাশ করে ত্রিভুবন রক্ষা করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.