রেস্ট টাইম প্রথা বাতিল ও চাকরি জাতীয়করণসহ বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন দেশের আনসার বাহিনীর সদস্যরা। সবশেষ রোববার (২৫ আগস্ট) দাবি আদায়ে সচিবালয় ঘেরাও করেন তারা। একপর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সমর্থনে শিক্ষার্থীরা সে জায়গায় ছুটে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত আনসার সদস্যদের সঙ্গে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।
রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে এ কথা জানান তিনি।
মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, বিশৃঙ্খল আন্দোলনকারীরা অঙ্গীভূত আনসার, যাদের সঙ্গে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানাই।
এর আগে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, রেস্ট টাইম প্রথা বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চাকরি জাতীয়করণসহ আনসার সদস্যদের অন্যান্য দাবিগুলোর বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।পরে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
‘রেস্ট টাইম’ প্রথা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আনসার আইনে বলা হয়েছে, একজন আনসার সদস্য টানা তিন বছর কাজ করার পর তাকে ছয় মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়। এটাকে ‘রেস্ট টাইম’ প্রথা বলা হয়। তারা ছয় মাস পর আবার কাজে যোগ দিতে পারবে। কিন্তু ওই সময়টা বেতন না হওয়ায় দুর্বিষহ দিন কাটাতে হয় তাদের।
জানা যায়, অন্তত ৭০ হাজার আনসার সদস্যদের সরকার বেতন দেয় না। তাদের যে কার্যালয়ে মোতায়েন করা হয়, সেখান থেকে তাদের বেতন দেওয়া হয়।
আনসার ও ভিডিপি সদরদপ্তরের কাছে প্রতি বছর বিভিন্ন সরকারি দপ্তর বা ইনস্টিটিউট থেকে গড়ে প্রায় ৫৫ হাজার সদস্য চাওয়া হয়। ৯০ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে তিন বছরের জন্য আনসার সদস্যদের ওইসব প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় নিয়োগ দেওয়া হয়।
একজন আনসার সদস্য দৈনিক বেতন পান ৫৪০ টাকা। এছাড়া বাহিনীটির পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জন্য রেশন সুবিধা বরাদ্দ দেওয় হয়।
তিন বছর পর আনসার সদস্যদের ছুটিতে পাঠানো হয় এবং সে সময়টা তারা কোনো বেতন পান না। এ কারণে চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন আনসার সদস্যরা।