বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), সঞ্চালন সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশে (পিজিসিবি) ও আদানি পাওয়ার সূত্র এটা নিশ্চিত করেছে। এ তিন সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর আগে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার হয়। এরপর পরীক্ষামূলক উৎপাদন ও সরবরাহ ঠিক থাকলে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ শুরু হবে। বাণিজ্যিক সরবরাহের দিন থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল হিসাব করা হয়।
বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সঞ্চালন লাইন তৈরি হলেও উপকেন্দ্রের কাজ শেষ হতে দেরি হয়ে যায়। এ কাজ করছে পিজিসিবি। একটি অস্থায়ী উপকেন্দ্র ব্যবহার করে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গত ১৬ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এরপর মাঝেমধ্যে ১০০ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হয়েছে। এখন উপকেন্দ্র তৈরি হয়ে গেছে।
পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী আজ বলেন, বুধবার রাতেই সঞ্চালন লাইন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পুরোপুরি তৈরি বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন যেকোনো মুহূর্তে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে।
আদানি গ্রুপের একটি সূত্র বলছে, তারা বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করার সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। অল্প অল্প করে সরবরাহ বাড়ানো হবে। আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই প্রথম ইউনিট থেকে পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়ে যাবে।
তবে পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, সব প্রস্তুতি শেষ হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একটি বড় কেন্দ্র চাইলেই হুট করে উৎপাদন শুরু করতে পারে না। একটু একটু করে ধাপে ধাপে উৎপাদন বাড়ানো হয়। এর মধ্যে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার রাতে বলেন, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রে থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি শুরু হয়নি। প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে।
২০১৭ সালে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুসারে আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ২৫ বছর ধরে বিদ্যুৎ কিনবে পিডিবি। তবে উৎপাদন শুরুর আগেই এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লার দাম নিয়ে আপত্তি তোলে পিডিবি। এ নিয়ে ইতিমধ্যে আদানির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছে পিডিবি। আদানির প্রতিনিধিদল বলেছে, পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দামের চেয়ে তাদের কয়লার দাম বেশি হবে না। বিষয়টি সমাধানে দুই পক্ষের মধ্যে চূড়ান্ত সমঝোতা চলছে। এ ছাড়া আদানির সঙ্গে চুক্তি নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপিসহ বিভিন্ন পক্ষ ইতিমধ্যে চুক্তি বাতিলের দাবি করেছে।